সংক্ষিপ্ত

পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়ছে গঙ্গাসাগরে। এই মেলা করোনার সুপার স্প্রেডার হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকমহলের। এমনকী, হাইকোর্টের নির্দেশ না মেনেই গঙ্গাসাগরে স্নান সারলেন বহু পুণ্যার্থী।  

শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। এমনকী, করোনাবিধি (Corona Restriction) মানার উল্লেখও করা হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে মেলা করার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু, মেলা প্রাঙ্গণে সেই নির্দেশ মানার ছবি তেমন ভাবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে প্রশাসনের তরফে কোনও বিষয়ে খামতি রাখা হচ্ছে না। পুণ্যার্থীদের সতর্ক করার জন্য সব সময় সতর্ক করা হচ্ছে, প্রচার করা হচ্ছে মাইকে। কিন্তু, তারপরও নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে স্নান সারলেন কয়েক হাজার মানুষ। 

কলকাতা হাইকোর্টের তরফে কড়া কোভিডবিধি মানার কথা উল্লেখ করা রয়েছে। বলা হয়েছে, ৫০ জনের বেশি কোথাও যেন জমায়েত না হয়। কিন্তু, তারপরও বেশিরভাগ জায়গাতেই জমায়েত লক্ষ্য করা গিয়েছে। পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়ছে গঙ্গাসাগরে। এই মেলা করোনার সুপার স্প্রেডার হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকমহলের। এমনকী, হাইকোর্টের নির্দেশ না মেনেই গঙ্গাসাগরে স্নান সারলেন বহু পুণ্যার্থী।  

আরও পড়ুন- আশঙ্কা সত্যি করে গঙ্গাসাগরই কী হচ্ছে সুপার স্প্রেডার, ভিড় বাড়াচ্ছে চিন্তা

আরও পড়ুন- গঙ্গাসাগর থেকে অগ্নিদগ্ধ মহিলাকে নিয়ে হাওড়ায় পৌছল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, ভর্তি করা হল হাসপাতালে

উচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাগরে কেউ স্নান করতে পারবেন না। কিন্তু, সেই বিধি নিষেধকে গুরুত্ব দিলেন না বহু পুণ্যার্থী। বরং ভোর থেকেই সতীর্থদের সঙ্গে পূণ্য স্নান শুরু করে দেন তাঁরা। ভোর থেকেই গঙ্গাসাগর প্রাঙ্গণে স্নান করেন পুণ্যার্থীরা। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে শুরু করে বেলার দিকে। ১ ও ২ নম্বর ঘাটে সেভাবে লোক সমাগম না থাকলেও ৩, ৪, ৫ নম্বর ঘাটে ভিড় করতে শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। এদিকে সমুদ্র সৈকতে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও পুণ্যার্থীদের স্নানে বাধা দিতে দেখা যায়নি তেমন কাউকেই। এমনকী, গাদাগাদি করে পুজো দিলেন কপিল মুনির মন্দিরেও। 

এরই মধ্যে গঙ্গাসাগর পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সেখানে সব বিধিনিষেধ ঠিক করে মানা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সদস্যরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেন। সূত্রের খবর, মেলার পরিকাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি। এই পরিস্থিতিতে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গিয়েছে। হাইকোর্টের রায় মেনে মেলা চালু রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে দফায় দফায় প্রশাসনিক বৈঠক। আর তারপর আজ সকাল থেকেও সেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেল মেলা প্রাঙ্গণে। 

তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গঙ্গাসাগর মেলায় এসে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে দেখা গিয়েছে বহু পুণ্যার্থীকে। স্নান করেননি অনেকেই। এমনকী, করোনাবিধি মেনে মাস্ক পরে থাকতে দেখা গিয়েছে বহু পুণ্যার্থীকেই। প্রথমবার গঙ্গাসাগর মেলায় এসে বেজায় খুশি এক প্রবীণ পুণ্যার্থী। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মেলার আয়োজন নিয়ে সরকারের প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে যে সমুদ্রে স্নান করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা কেউ স্নান করিনি। আসলে নিজের সুরক্ষা নিজেকেই মানতে হবে। সরকার এক্ষেত্রে কী করবে। তাই আমরা মাথায় জল ছিটিয়ে নিয়েছি।"