সংক্ষিপ্ত
- ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল যশ
- শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে আসছে
- আমফান ছিল সুপার সাইক্লোন
- তীব্রতা ছিল অনেকটাই বেশি
দিনকয়েক আগে উত্তর আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া নিম্মচাপ ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল। সোমবার ইন্ডিয়ান মেটিরিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (IMD) জানিয়েছে, পূর্ব বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ অবশেষে ঘূর্ণিঝড় যশ-এ পরিণত হয়েছে। এটি পোর্টব্লেয়ার থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করবে। তারপরের ২৪ ঘণ্টায় এটি গুরুতর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আবহাওয়া দফতর স্পষ্ট করে দিয়েছে ২৪ মে অর্থাৎ সোমবার সকালেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস এই ঘূর্ণিঝড় যশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে যেতে থাকবে। বুধবার বিকেলের পর স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। আগেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সাগর ও ওড়িশার পারাদ্বীপের মধ্যবর্তী কোনও স্থানে একটি আছড়ে পড়বে। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার। গত বছর ২০ মে আমফান আছড়ে পড়েছিল বঙ্গ উপকূলে। প্রবল তাণ্ডব চালিয়েছিল। তার ঠিক এক বছর পাঁচ দিনের মাথায় আছড়ে পড়তে চলেছে সাইক্লোন যশ। তাই ইতিমধ্যেই তুলনা শুরু হয়ে গেছে কোনটি বেশি ভয়ঙ্কর। আবাহওয়াবিদদের কথায় ঘূর্ণীঝড় যশ আমফানের মত শক্তিশালী না হলেও এটি যে কোনও সময় ভয়ঙ্কর চেহারা নিতেই পারে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের কথায় আমফান তৈরি হয়েছিল কলম্বো থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে। ভারত মহাসাগরের খুব কাছেই তৈরি হয়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। আর যশ তৈরি হয়েছে মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আমফান স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পরে বাংলাদেশের দিকে গিয়েছিল। আবহাওয়ার দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী যশ স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পরে মধ্যভারতের দিকে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের কথায় আমফান ছিল সুপার সাইক্লোন। আর অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হল যশ- তাই দুটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে কোনও তুলনাই চলে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন দুটির মধ্যে কোনও তুলনা চলে না। তবে যশ অতি তীব্র ঘূর্ণীঝড় আর সেই কারণেই প্রথম থেকেই সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। পুনের ইনস্টিটউট অব ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজির সাইক্লোন বিশেষজ্ঞ পার্থ মুখোপাধ্যায়া বলেছেন, সুপার সাইক্লোনে হাওয়ার গতিবেগ থাকে অনেক বেশি। তাই স্বাভাবিকভাবেই তার ধ্বংসক্ষমতাও বেশি। কাজেই আমফান যশের তুলনায় অনেকটাই ভয়ঙ্কর। তিনি আরও বলেছেন যশ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর সমুদ্রের ওপর দিয়ে মাত্র ৬০০ কিলোমিটার আসবে। আর আমফান সমুদ্রের ওপর দিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে শক্তিসঞ্চয় করেছিল। যশ যদি আরও দূরে তৈরি হত তাহলে এটির আরও ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারত। আমফানের ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল প্রায় ২৬০ কিলোমিটার।আর যশে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি প্রায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার।