সংক্ষিপ্ত
একুশের নির্বাচনের পর এই প্রথমবার নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁদের বৈঠকে বাংলার ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি সহ একাধিক বিষয় উঠে আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
দলের সর্বভারতীয় সভাপতির ডাকে তড়িঘড়ি শনিবার রাতেই দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গতকালই দিল্লিতে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল তাঁর। এদিকে, রবিবার দিন একের পর এক কর্মসূচি ছিল নাড্ডার। আর সেই কারণেই গতকাল দিলীপকে সময় দিতে পারেননি তিনি। তাই আজ তাঁরা বৈঠকে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- ভেস্তে গেল ছিনতাইয়ের প্ল্যান, লাটাগুড়ির রাস্তায় যাত্রীদের হাতে ধরা পড়ল জ্যান্ত ভুত
একুশের নির্বাচনের পর এই প্রথমবার নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁদের বৈঠকে বাংলার ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক বিষয় উঠে আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিধানসভা ভোটে বাংলায় ২০০টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, সেখানে মাত্র ৭৭টি আসনে জেতে তারা। এদিকে ভোটের আগে তৃণমূল থেকে অনেকেই গিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু, ভোট মিটতে মিটতেই বেসুরো হতে শুরু করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- ভক্ত ছাড়াই পুরীর রথযাত্রা, চলছে টানা ৪৮ ঘণ্টার কারফিউ
ইতিমধ্যেই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয়েছে মুকুল রায়ের। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে বেসুরো হতে শুরু করেছেন অনেকেই। এর ফলে বাংলায় বিজেপির সংগঠন আগের থেকে অনেকটাই নড়েবড়ে। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, নির্বাচনে হারের কারণ ও বঙ্গ বিজেপির একের পর এক নেতার বেসুরো হওয়ার কারণ পর্যালোচনা করতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকাশ্যে এসেছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক কোন্দল। সেই সব বিষয় আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসবে বলে সূত্রের খবর।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বাংলা থেকে জায়গা করে নিয়েছেন চারজন। আর সরানো হয়েছে দেবশ্রী চৌধুরী ও বাবুল সুপ্রিয়কে। মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছইলেন বাবুল। যা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। এমনকী, পোস্টটি স্বয়ং দিলীপ ঘোষেরও পছন্দ হয়নি। তারপর বেসুরো মন্তব্য করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ। তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, "পার্টির গায়ে অন্য গাছের ছাল। বিষয়টা সবাই জানে। এক গাছের ছাল সবসময় অন্য গাছে লাগে না। আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছিলাম লাগেনি। আমরা আমাদের কাজ করছি। যাঁরা দলে এসেছেন তাঁরা পার্টির আদর্শ জেনেই আসছেন। পার্টির স্বার্থর থেকে যখন ব্যাক্তিগত স্বার্থ বড় হয় তখন সমস্যা তৈরি হয়। আমাদের মনোবলে পার্টি বেড়েছে। তাই তাঁরা এসেছিলেন। আমাদের কর্মীদের মনোবল ভাঙেনি। রাজনৈতিক হিংসার কারণে অনেক কার্যকর্তা বসে গিয়েছিলেন। পার্টি যাঁদের উপর ভর করে এগেছিল তাঁরা আছে সেভাবেই পার্টি এগোবে।" পরে অবশ্য এর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন সৌমিত্র নিজেই। কিন্তু, তা হলেও উত্তর উত্তর ছড়িয়ে পড়ছে এই বিষয়টি। এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়েই চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে এই বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে অনুমান বিশ্লেষকদের একাংশের।
আরও পড়ুন- কোভিডে কমল একদিনের আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যু শূন্য ১৬ জেলা
বাংলায় নির্বাচনের পরে প্রথমবার দিল্লিতে বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু, এর আগে একাধিকবার দিল্লিতে গিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী ও জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ভোট পরবর্তী হিংসা, বেসুরো দলীয় কর্মী সহ একাধিক বিষয় উঠে এসেছিল তাঁদের বৈঠকে। কিন্তু, সেই সময় ডাক পাননি দিলীপ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তাহলে কি দলে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তিনি? তাঁকে সরিয়ে কি এবার শুভেন্দুকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে? তবে এনিয়ে প্রকাশ্যে তেমন একটা চর্চা হয়নি। যদিও এই পরিস্থিতিতে দিলীপকে দিল্লিতে তলব করার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।