সংক্ষিপ্ত

বহু নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তার ছবি

দুয়ারে সরকার প্রকল্পেও সে সামনের সারিতে

দেবাঞ্জন দেব কাণ্ডের দ্রুত তদন্ত চাইল বিজেপি

টিকা কেলেঙ্কারির চক্র আরও বড় বলে দাবি

কখনও তাঁকে দেখা যাচ্ছে রাজ্যসভার সাংসদ ডা. শান্তনু সেন-এর সঙ্গে, কখনও কলকাতা পুরসভার অনুষ্ঠানে তিনি এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম একএ অপরকে প্রতি-নমস্কার করছেন, কখনও বা বস্ত্র বিতরণ করছেন বিধায়ক দেবাশীষ কুমারের পাশে দাঁড়িয়ে, পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স। কখনও বসে আছেন বর্ষিয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পাশে। ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব-এর সঙ্গে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠতার ছবি প্রকাশ করে এই ঘটনার দ্রুত ও সঠিক তদন্ত দাবি করল রাজ্য বিজেপি। একইসঙ্গে রাজ্যে বড়সড় টিকা কেলেঙ্কারি চলছে বলে দাবি করল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল।  

বৃহস্পতিবার, রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি তথা সাংসদ ডাক্তার সুভাষ সরকার অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোভিড টিকাকরনের দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের এত কাছে তাঁকে বারবার দেখা যাওয়া সত্ত্বেও দেবাঞ্জন দেব-এর উদ্যোগে কলকাতা পুরসভার ব্যানারে পরপর ভুয়ো টিকাদান শিবির চালানোর দায় কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য প্রশাসন কীকরে এড়াতে পারে, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। দেবাঞ্জন দেব-এর একটি টুইট পোস্ট দেখিয়ে বিজেপির আরও দাবি, দেবাঞ্জনকে 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচিতে গত ছয় মাস ধরে থাকতে দেখা গিয়েছে।

এত কাছাকাছি বৃত্তে থাকা সত্ত্বেও কেউ তাঁকে কেন ধরতে পারল না, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডাক্তার সুভাষ সরকার। কলকাতা পুরসভা, রাজ্য পুলিশ, রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ - সবাই কি ব্যর্থ হল? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সেইসঙ্গে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যদি ভুয়ো আইএএস-এর দেওয়া টিকাগুলি জাল না হয়, তাহলে এই টিকা কোথা থেকে চুরি হল, তার তদন্ত করতে হবে। দেবাঞ্জন দেবের দাবি মতো যদি সে টিকাগুলি বাগড়ি মার্কেট থেকে কিনে থাকে, তাহলে এই ক্ষেত্রে চক্রান্ত আরও বড় বলে দাবি করা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরিও প্রশ্ন তুলেছেন, শক্তিশালী কেউ তার পিছনে না থাাকলে কি দেবাঞ্জন দেব নিরীহ মানুষের প্রাণ নিয়ে খেলতে পারত?

তবে শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যে টিকা চুরির আরও ঘটনার অভিযোগ করছে প্রধান বিরোধী দল। তাদের দাবি, হাওড়ার মানকুর জলস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকা নেওয়ার জন্য নিজের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েছিলেন, অবনী খুঁটিয়া নামে এক ব্যক্তি। তাঁকে পঞ্চায়েত প্রধান এর কাছ থেকে লিখিয়ে আনার অজুহাতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরের দিন তার নাম নথিভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও, তাঁর মোবাইলে টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেট এসেছে বলে জানিয়েছে বিজেপি। অবনী খুঁটিয়া মতো ব্যক্তিদের দলের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এইভাবে টিকা চুরি করে রাজ্যে কালোবাজারি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও বিষয়গুলি জানানোর হুমকি দিয়েছে বিরোধী দল।