সংক্ষিপ্ত
- বন্ধ লোকাল ট্রেন
- লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত আমচাষীরা
- জলের দরে বিক্রি করতে হচ্ছে আম
- বাজারে মিলছে না মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত আম-লিচু
শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় লোকাল ট্রেন বন্ধে স্তব্ধ মুর্শিদাবাদ জেলার আম রপ্তানি, নাজেহাল ব্যবসায়ী মহল।
লোকাল ট্রেন চালুর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানির সুযোগের দাবিতে সরব হয়েছেন জেলার লালগোলা, ভগবানগোলা, রেজিনগর, বেলডাঙ্গা, জঙ্গিপুর সহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। করোনা পরিস্থিতিতে ও লক ডাউনের কারনে জেলায় উৎপাদিত আম রপ্তানি করতে না পারায় চরম বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ফলে লক ডাউনের সময় সুচি মেনে এলাকায় ঘুরে ঘুরে কিংবা ট্রলিতে করে হাঁক দিয়ে বক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন জেলার ওই রসাল ফল।
এবছর আম ও লিচু চাষে ফলন আশানুরূপ হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় ওই দুই চাষে খরচ যেমন কম হয়েছিল, তেমনি সাইজও বেশ ভালই ছিল । ফলে চাষিরা ভেবেছিলেন গত বছরের আর্থিক ক্ষতিপূরণ বেশ খানিকটা উঠে আসবে। কিন্তু করোনা কারনে ফের শুরু হল লক ডাউন। সুতরাং জেলার আম পড়ে রয়েছে জেলাতেই। মুর্শিদাবাদ থেকে সড়ক যোগে মুলত দক্ষিন বঙ্গের শহর দুর্গাপুর, আসানসোল হয়ে বিহারে রপ্তানি করা হত আম ও লিচু।
অন্যদিকে লালগোলা – শিয়ালদা শাখার ট্রেনে করে কলকাতাতে আম পৌঁছে যেত। আজিমগঞ্জ ও জঙ্গিপুর স্টেশন হয়ে রেলপথে জেলার আম পাড়ি দিত উত্তরবঙ্গের পথে। কার্যত সেই সব পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় সুস্বাদু আম লিচু কম দামে জেলার মানুষের কাছেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ওই দুই চাষের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। চাষিদের দাবি এই সময় লিচু বিক্রি হত ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে সেই লিচু বিকচ্ছে ৮০ ঠেকে ৫০ টাকা দরে।
হিমসাগর আম বিক্রি হওয়ার কথা ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে, তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৫০ টাকায়। গোলাপখাস কম করে হলেও ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করা যেত, সেই সিঁদুর রাঙা গোলাপখাসের কদর নেমেছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। এদিকে যেভাবে তাপমাত্রার পারদ বেড়েছে, তাতে লিচু তো বটেই, আম বেশি দিন গাছে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন চাষিরা। এছাড়া ঝড়ের পরেও মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের ।
কিন্তু চাষি একটু লাভের মুখ দেখতে একটু আগে ভাগেই আম পাড়েন সেই লাভ এবার আর হচ্ছে না বলেই ধরে নিয়েছেন চাষিরা। কাজেই দ্রুত লোকাল ট্রেন চালুর মাধ্যমে জেলার উৎপাদিত আম রপ্তানির সুযোগের দাবিতে বিভিন্ন স্টেশন এলাকায় এই আম ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়। এই ব্যাপারে লালগোলার আম চাষি সুধীর সরকার, ভগবানগোলার মরজেম হোসেন বলেন, “ যে ভাবে গুমোট গরম পড়েছে ঝড় বৃষ্টির দাপট লক্ষ করা যাচ্ছে ,তাতে বেশি দিন গাছে আম রাখা যাবে না । আর আম বাইরে পাঠাতে না পারলে ফের দফা রফা। দ্রুত অন্তত কয়েক দিন লোকাল ট্রেন চালু না হলে চরম ক্ষতির মুখে পড়বে আমরা"।