সংক্ষিপ্ত

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন শুভেন্দুকে নিতাইয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এনিয়ে বেজায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেছেন।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নেতাইয়ের (Netai) কর্মসূচি নিয়ে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন শুভেন্দুকে নিতাইয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। এনিয়ে বেজায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেছেন। সোমবার রাজভবনে মুখ্যসচিব (Chief secretary) ও ডিজিকে (DGP) ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি। টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, "এই ঘটনা জরুরি অবস্থার কথা মনে করায়।"

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নেতাই যাচ্ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই নেতাই যাওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি। আদালত অনুমতি দিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, ঝিটকার জঙ্গলের আগে তাঁকে বাধা দেয় পুলিশ (Police)। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে তিনি বচসায় জড়ান। তখনই তিনি বলেছিলেন, আদালতের রায় সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও তাঁকে নেতাইয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হল। এনিয়ে রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানাবেন তিনি। 

আরও পড়ুন- 'ত্রিপুরার পর গোয়াতে চাকরি', শুভেন্দু অধিকারীর টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা

এরপর নেতাইয়ে যেতে না পারার বিষয়টি উল্লেখ করে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপালের কাছে অভিযোগপত্র পাঠান। ঠিক তারপরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন রাজ্যপাল। এনিয়ে টুইট করেন তিনি। লেখেন, "এই অস্থির পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে রাজ্যে জরুরি অবস্থা চলছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হল। এই নিয়ে বিস্তারিত জানতে মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে ১০ জানুয়ারি লিখিত রিপোর্ট সহ সকাল ১১টায় রাজভবনে আসতে বলেছি।"

 

 

এ বিষয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন "একজনকে আটকেছে, আরেকজন ডেকে পাঠিয়েছেন। এটা প্রশাসনের বিষয় প্রশাসনই বলতে পারবে। তবে বিজেপির (BJP) কোনও নেতাকে আটকালে রাজ্যপাল তৎপর, অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যদি কিছু হয় সেই তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমি মনে করি রাজ্যপালের পদ এবং রাজ্যপালের চেয়ারের একটা গরিমা আছে। সেটা দলমত নির্বিশেষে যিনি রাজ্যপাল থাকবেন তাঁর পালন করা উচিত।"

প্রশঙ্গত, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামে সশস্ত্র বাহিনীর ছোড়া গুলিতে গ্রামের চারজন মহিলা-সহ ৯ জন নিহত হন। জখম হয়েছিলেন ২৮ জন গ্রামবাসী। এরপর থেকে প্রতি বছর নেতাই গ্রামে শহিদদের প্রতি এদিন শ্রদ্ধা জানায় তৃণমূল। শুক্রবারও সেখানে গিয়েছিলেন সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি বিধায়ক অজিত মাইতি প্রমুখ। এমনকী, প্রতি বছর সেখানে যেতেন শুভেন্দুও। এবারও সেখানে যাওয়ার জন্য আগেই হাইকোর্টের থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু, তারপরও তাঁকে ওই গ্রামে যেতে বাধা দেয় পুলিশ। যা নিয়ে ফের রাজভবন–নবান্নর সংঘাত শুরু হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।