সংক্ষিপ্ত
- দেশের জন্য শহিদ হলেন জলপাইগুড়ির বীরপুত্র
- সোমবার রাতে জগন্নাথের শহিদ হওয়ার খবর পৌঁছয়
- কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় জখম হয়েছিলেন জগন্নাথ
- রেখে গেলেন বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী-সন্তানকে, শোকস্তব্ধ এলাকা
ডালিয়া সরকার: ভোটযুদ্ধে মেতে রয়েছে বাংলা। দিনভর একে অপরের বিরুদ্ধে নোংরা মন্তব্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন রাজনৈতিক নেতারা। আর রাজ্যের এমন এক উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শহিদের মৃত্যু বরণ করলেন এই বাংলার এক যুবক। মাত্র বত্রিশ বছর বয়সেই দেশের জন্য নিজের প্রাণকে উৎসর্গ করলেন তিনি। বীরের মতো পাঁচ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছেন। কিন্তু, শেষপর্যন্ত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসতে পারলেন না জলপাইগুড়ির জগন্নাথ রায়। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর প্রয়াণেক খবর ধূপগুড়ির পশ্চিম শালবাড়িতে পৌঁছতেই চারিদিকে কান্নার রোল ওঠে। বুক ভরা হাহাকারে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে যান জগন্নাথের স্ত্রী ও মা এবং আত্মীয় থেকে পাড়া-পড়শিরা।
২৫ মার্চ শ্রীনগর-বারামুল্লা জাতীয় সড়কে সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলা হয়। লাওয়াপোরো এলাকা দিয়ে সে সময় যাচ্ছিল সিআরপিএফ-এর ৭০ নম্বর ব্যাটেলিয়ান। জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ পরেই সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছিল ২ জওয়ানের শহিদের হওয়ার খবর। জখম হয়েছিলেন ৩ জওয়ান। এই জখম জওয়ানদের মধ্যে একজন ছিলেন ধূপগুড়ির জগন্নাথ রায়। ধূপগুড়ির পশ্চিম শালবাড়িতে তাঁর জখম হওয়ার খবর পৌঁছতেই কাশ্মীরে চলে গিয়েছিলেন দাদা-শ্যালক-সহ কিছু পরিজন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছিল জগন্নাথের। কিন্তু, সোমবার সন্ধ্যায় জগন্নাথের শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপরেই সিআরপিএফ সূত্রে জগন্নাথের মৃত্যুর কথা দাদা-কে জানিয়ে দেওয়া হয়। ধূপগুড়ির এই বীর সন্তানের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা এবং স্ত্রী ও সন্তান। এছাড়াও রয়েছেন দাদা-বউদি। জগন্নাথের বাবা প্রয়াত হয়েছেন বহু বছর আগে। পরিবারের প্রধান আয়কারী ছিলেন জগন্নাথ। পুরো সংসার তাঁর উপরেই নির্ভর করত। স্বাভাবিকভাবেই সন্তানের প্রয়াণের খবরে শোকে আত্মহারা রায় পরিবার। জগন্নাথের স্ত্রী কারোর সঙ্গেই কোনও কথা বলতে পারছেন না। স্বামীর মৃত্যুর খবর তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। ধূপগুড়িতেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে জগন্নাথের।