সংক্ষিপ্ত
- মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ডে ধৃত উৎপল বেহরা
- নিজের ফাঁসি চাইছে ধৃত, দাবি পুলিশের
- নবান্নে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ মুখ্যমন্ত্রীর
- তদন্ত নিয়ে আশ্বস্ত করলেন নিহত শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর পরিবারকে
নিজের বাবা- মা, পাড়া, প্রতিবেশী তো বটেই। যে শিক্ষকের পরিবারকে খুনে সে অভিযুক্ত, তাঁর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবরাও তাকে খুনি বলে মানতে নারাজ। জিয়াগঞ্জে সপরিবার শিক্ষক খুনে অভিযুক্ত এ হেন উৎপলই নাকি থানার লকআপে বসে নিজের ফাঁসি চাইছে। পুলিশ সূত্রের দাবি অন্তত এমনই।
শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী এবং ছ' বছরের ছেলেকে খুনে অভিযুক্ত উৎপল বেহরা এই মুহূর্তে জিয়াগঞ্জ থানার লক আপে রয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি অনুযায়ী, বন্দি অবস্থাতেই নাকি সে থানার এক অফিসারের উদ্দেশে বলে, 'স্যর আমি যে কাজ করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত আমাকে করতেই হবে। আমারপ ফাঁসি হওয়া দরকার।'
আরও পড়ুন- জিয়াগঞ্জে পাঁচ মিনিটে তিন খুন, পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তথাগতর
আরও পড়ুন- জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, পুলিশের জালে বন্ধুপ্রকাশ পালের পালের এক বন্ধু
উৎপলকে খুনি হিসেবে পুলিশ দাবি করলেও এখনও তা নিয়ে সংশয়ে মৃত বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর স্ত্রী বিউটি পালের পরিবার। বৃহস্পতিবার নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সংশয় দূর করতে জিয়াগঞ্জ থানায় ডেকে পাঠানো হয়। খোদ পুলিশ সুপার শ্রী মুকেশ সেখানে হাজির হয়ে নিহত শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্ত কীভাবে এগিয়েছে, কোন কোন প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ সাগরদিঘির উৎপলকে গ্রেফতার করেছে, তার বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ দুই পরিবারের সদস্যদের দেখানো হয়। খুন করতে আসা এবং যাওয়ার পথে জিয়াগঞ্জ সদর ঘাটের সিসিটিভি ফুটেজে উৎপলের ছবি ধরা পড়েছে বলে দাবি পুলিশের। সেই ছবিও দেখানো হয় দুই পরিবারের সদস্যদের। ধৃতের জবানবন্দিও শোনানো হয় নিহত শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর বাবা, মা এবং আত্নীয়দের।
আরও পড়ুন- দশমীর দিন বাড়িতেই ছিল ছেলে, দাবি জিয়াগঞ্জের হত্যায় অভিযুক্তের বাবার
পুলিশ তথ্যপ্রমাণ দিয়ে বোঝানোর পরেও নিহত বন্ধুপ্রকাশ পালের মা মায়ারানী পাল বলেন, 'এর মধ্যে রহস্য আছে। উৎপল একা এই খুন করেনি, তাছাড়া সামান্য কয়েক হাজার টকার জন্য ও কেন আমার ছেলের পরিবার কে শেষ করে দিতে যাবে । এর পিছনে আমার পুরাতন শত্রুদের হাত থাকতে পারে ।
এর পরেও অবশ্য নিহতেদর পরিবারের সংশয় পুরোপুরি দূর হয়নি। এর পরেই নিহতদের পরিবারের সদস্যদের শনিবারই কলকাতায় এনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়। ভবানী ভবনে পুলিশের শীর্ষ কর্তারা বোঝানোর পর পরিবারের সদস্যদের নবান্নে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, এই ঘটনায় দোষীদের কোনওভাবে ছাড়া হবে না। তদন্তেও কোনও গাফিলতি থাকবে না। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিহতদের পরিবারকেও যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।