সংক্ষিপ্ত
যে ১৬ অগাস্ট বাংলায় 'খেলা হবে' দিবস পালনের ডাক দিলেন মমতা, সেই দিনই ১৯৪৬ সালে ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে-র ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাকতালীয় না প্রতীকী, কী বলল বিজেপি?
২১ জুলাই-এর মঞ্চ থেকে ১৬ অগাস্ট বাংলায় 'খেলা হবে' দিবস পালন করার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ওই দিন রাজ্যের প্রতি ব্লকে ব্লকে ক্লাবগুলিকে ক্রীড়া সরঞ্জাম দেওয়া হবে। তবে তৃণমূলের এই 'খেলা হবে' দিবসকে গিরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, ওই ১৬ অগাস্ট তারিখকেই ১৯৪৬-এ মুসলিম লিগ ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং শুরু করেছিল 'গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং'। খেলা হবে দিবস, শাসক দলের পক্ষ থেকে ফের হিংসা শুরু করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা।
এদিন, মমতার ২১ জুলাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরই, বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্ত টুইট করেন, 'আকর্ষণীয় (বিষয়) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৬ আগস্টকে 'খেলা হবে দিবস' হিসাবে ঘোষণা করেছেন। মুসলিম লিগ একই দিনকে ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে বলে ঘোষণা করেছিল এবং ১৯৪৬ সালের গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং শুরু করেছিল। আজকের পশ্চিমবঙ্গে, "খেলা হবে" প্রতিপক্ষের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতীক হয়েছে'। পরে কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্যও 'ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে'র কথা তুলে বলেন ওই দিন রাজ্যবাসীকে সাবধানে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন - 'পেগাসাস, মোদীর নাভিশ্বাস', সুপ্রিম কোর্টকে সুয়োমোটো মামলা করার আবেদন মমতার
আরও পড়ুন - 'নজরদারি রাষ্ট্র বানাচ্ছে, মোদী সরকারকে প্লাস্টার লাগান', ভারতকে জোটের বার্তা মমতা
আরও পড়ুন - 'বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল' - তীব্র নিন্দা জানালেন অভিষেক, কী বললেন তিনি
১৯৪০ সালের লাহোর রেজোলিউশন থেকেই মুসলিম লিগ উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বে ভারতের মুসলিম অধ্যুসিত এলাকাগুলি নিয়ে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনেরদাবি জানিয়েছিল। ১৯৪৬-এ মুসলিম লিগের এই দাবি মেনেও নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছি, কিন্তু কংগ্রেস শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসবে, এই সন্দেহে ১৯৪৬ সালের জুলাইয়ে তারা এই চুক্তি বাতিল করেছিল। ১৬ অগাস্ট 'ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে' বলে ঘোষণা করে ধর্মঘট ডেকেছিল।
মহম্মদ আলি জিন্না সাফ জানিয়েছিলেন তিনি 'বিভক্ত ভারত' চান নাহলে 'ধ্বংস হওয়া ভারত'। আর এই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পটভূমিতেই কলকাতায় শুরু হয়েছিল ব্যাপক দাঙ্গা। পরের তিনদিনে ৪,০০০ এরও মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিলেন। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল, নোয়াখালী, বিহার, সংযুক্ত প্রদেশসমূহ (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ), পঞ্জাব এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে।
এদিন অবশ্য মমতা সাফ জানিয়েছেন, শুধু বাংলায় নয় ভারতের রাজ্যে রাজ্যেই খেলা চলবে। যতদিন না দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপি সরছে, ততদিন খেলা চলবে।