সংক্ষিপ্ত

১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে গোটা একটা গ্রাম। শিশুদের পড়াশোনা হ্যারিকেনের আলোয়। জমি জটে আজও আলো পৌঁছোয়নি পাণ্ডুয়ার বেড়েলা গ্রামে। কোথাও অভিযোগ জানাতে না পেরে চোখে জল গ্রামবাসীদের।

প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে বিদ্যুৎ নেই পান্ডুয়ার বেড়েলা গ্রামের গয়লা পুকুর পাড়ায়। চরম দুঃখ দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন প্রায় ১৫ থেকে ১৬টি পরিবারের সদস্যরা। আবেদন জানাতে জানাতে ক্লান্ত হয়ে কখনও কেঁদেও ফেলছেন তাঁরা। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর বাগানই এখন তাঁদের ভরসা। ইতিমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা। 

বছর বারো আগে পান্ডুয়ার বেড়েলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গয়লা পুকুর পাড়ায় জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন কয়েকটি পরিবার। তাঁদের পর ওই এলাকায় বসবাস শুরু করে আরও কয়েকটি পরিবার। সেই সময় যাঁর মাধ্যমে তাঁরা জমিগুলি কিনেছিলেন, তাঁর কাছ থেকে জল ও বিদ্যুতের কোনওরকম অসুবিধা না ভোগ করার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, বছর কয়েক কাটতেই দেখা গেল অন্য চিত্র। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গেলে প্রয়োজন রয়েছে একটি ট্রান্সফরমার বসানোর। এছাড়াও যে জমিটির ওপর দিয়ে বিদ্যুতের তার আসবে। সেটা অন্য একটি পরিবারের জমি।


স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একদিকে দুই শরিকের বিবাদ, অন্যদিকে রাস্তার উপর দিয়ে গেছে তেত্রিশ হাজার ভোল্টের ইলেকট্রিকের তার। ফলে, সেই কারণেই এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি এই এলাকায়। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ইলেক্ট্রিসিটির জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। কবে বিদ্যুৎ পৌঁছবে সেই আশাতেই দিন গুনছে পরিবারগুলি। ট্রান্সফরমার মিটার বসানোর নির্দেশ পেয়ে উপযুক্ত স্থানের ব্যবস্থা করে রাখলেও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের কাছ থেকে অবহেলাই পেতে হয়েছে তাঁদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, রাত হলেই বাড়ে বিভিন্ন বিশাক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব। রয়েছে বিষধর সাপেরও আতঙ্কও, বর্ষাকালে তাই বিদ্যুতের অভাবে প্রাণনাশেরও আশঙ্কা রয়েছে শিশু থেকে বৃদ্ধদের। এলাকাবাসীর একটাই দাবি, এলাকায় পৌঁছোক বিদ্যুৎ। 

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নিমাই সরকার জানান, জায়গার সমস্যার থাকায় এতদিন  বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি ওই এলাকায়। বিদ্যুতের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। রাস্তা নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদ, আর তাতেই একটি পরিবারের বিরুদ্ধে কেস করা হয়। ওই এলাকায় দুই পরিবারের জায়গা ছাড়া থাকলে সমস্যার সমাধান হতে পারত। কিন্তু, দুই পরিবারের কেউই নিজেদের জায়গা ছাড়তে রাজি নয়, সেই কারণে এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছনোর সমস্যা এতও বছর ধরে রয়েই গেছে। 

আরও পড়ুন- শিয়ালের আতঙ্কে গোটা গ্রাম, শিয়ালের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত ১ শিশু সহ ৭ জন, দিনের বেলাতেও আতঙ্কে বাসিন্দারা
আরও পড়ুন- জলপাইগুড়ির গড়ালবাড়ি গ্রামের ব্রিজ ভেঙে গিয়ে বিপর্যস্ত গোটা গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা
আরও পড়ুন- বাড়িতে কুমিরের ডিম ফুটে বেরিয়ে আসছে বাচ্চা, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রাম জুড়ে