সংক্ষিপ্ত
- হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন রোগী
- জরুরি বিভাগের কর্তব্য়রত চিকিৎসক টিভি দেখতে ব্যস্ত
- সরকারি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু
- হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ রোগীর পরিবারের লোকেরা
রোগীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তিনি। আর ডাক্তার তখন টিভি দেখতে ব্যস্ত! শেষপর্যন্ত যখন তিনি রোগীকে দেখতে এলেন, ততক্ষণে সবশেষ। রবিবার ভোরে এমনই অমানবিক ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা হাসপাতালে। ঘটনার পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ দেখান রোগীর বাড়ির লোকেরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কালনা হাসপাতালের সুপার।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে বাড়ি কিশোর দাসের। শনিবার রাতেই কালনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে বমি হচ্ছিল কিশোরবাবুর। সঙ্গে জ্বর ছিল। গভীর রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়। বাড়ির লোকেদের দাবি, হাসপাতালের রেডে শুয়ে যন্ত্রণায় রীতিমতো ছটফট করছিলেন কিশোরবাবু। তখন কর্তব্য়রত নার্সকে বিষয়টি জানান তাঁরা। জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয় কিশোর দাসের পরিবারের লোকেদের। অভিযোগ, কালনা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গিয়েও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। যিনি তখন ডিউটিতে ছিলেন, তিনি টিভি দেখতে ব্যস্ত ছিলেন। কিশোর দাসের পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, তাঁকে একবার দেখতে যাওয়ার কর্তব্যরত চিকিৎসকের হাতে পায়ে ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু, তাতেও কাজ হয়নি। শেষপর্যন্ত অবশ্য নিজের সময়মতো রোগীকে দেখতে এসেছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না। কিশোর দাসের মৃত্যুর পর কালনা হাসপাতালে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর পরিবারের লোকেরা। পুলিশ গিয়ে কোনওমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কিন্তু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক কীভাবে এমন অমানবিক হতে পারেন? সদুত্তর মেলেনি। কালনা হাসপাতালে সুপার কৃষ্ণকান্ত বড়াইয়ের অবশ্য দাবি, সুপারের ঘর ছাড়া হাসপাতালে কোথাও টিভি দেখার কোনও ব্যবস্থা নেই। রাতে সুপারের ঘর বন্ধ থাকে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এদিকে এই ঘটনার পর ময়নাতদন্ত না করিয়েই হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ নিয়ে চলে যান মৃতের পরিবারের লোকেরা।