সংক্ষিপ্ত
- দেশের পাশাপাশি এখন বিদেশেও পাড়ি দিয়েছেন মা দুর্গা।
- সেখানেও ধ্বনিত হচ্ছে আগমনী সুর।
- দুর্গাপুরের বাসিন্দা জয়জিৎ মিশ্র ইংল্যান্ডে থেকেও করছেন দুর্গা আরাধনা।
- সেখানে বিদেশিদের নিয়ে তিনি মাতেন দুর্গাপুজোয়।l
দেশের পাশাপাশি এখন বিদেশেও পাড়ি দিয়েছেন মা দুর্গা। সেখানেও ধ্বনিত হচ্ছে আগমনী সুর। দুর্গা উৎসবের টানেই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বাসিন্দা জয়জিৎ মিশ্র ইংল্যান্ডে থেকেও করছেন দুর্গা আরাধনা। সেখানে বিদেশিদের নিয়ে তিনি মাতেন দুর্গাপুজোয়। তাঁর এই বিরাট উদ্যোগে হাত বাড়িয়েছেন ২৫ বছর ধরে বিদেশে কর্মরত দুর্গাপুরের আরেক বাসিন্দা শিখা রায়। এ বছর তাঁদের পুজো তৃতীয় বছরে পা দিয়েছে। পুজোয় পৌরোহিত্য করেন জয়জিৎবাবু নিজেই।
বিদেশে দশকর্মার সামগ্রী অমিল হওয়ায় এই দুর্গাপুজোয় দশকর্মার বাজার হয় দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের একটি দশকর্মার দোকান থেকে। প্রতিমা এবং মণ্ডপ সেজে উঠেছে গ্রাম বাংলার হস্তশিল্পের বেশকিছু সামগ্রী দিয়ে। বাঙালি রীতিনীতি মেনেই চারদিন ধরে পুজোর সমস্ত আচার অনুষ্ঠান পালিত হয়। পুজোর উদ্যোক্তা প্রবাসী বাঙালি জয়জিৎ মিশ্র জানিয়েছেন,তিনি প্রায় ১২ বছর ধরে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কর্মসূত্রে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে রয়েছেন। সেখানে দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে ব্যাপকভাবে তিনি দুর্গাপুজোর অভাব বোধ করেন। ছোটবেলা থেকে দুর্গাপুরে কাটানো দুর্গাপুজোর স্মৃতি তাঁর মনে ব্যাপক ভাবে নাড়া দেয়। তাই শিকড়ের টানে ও জাতির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গত দুবছর ধরে বিদেশি এবং অন্যান্য প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে দুর্গাপুজো শুরু করেছেন। স্ত্রী মিনি ও মেয়ে অনুষ্কাকে নিয়ে ধুমধাম করে কাটান পুজো।
মণ্ডপ ও প্রতিমা সাজানোর জন্য তিনি বীরভূমের শান্তিনিকেতন থেকে বেতের ঝুড়ি,কুলো,সোলার কলকে নিয়ে গিয়েছেন। দুর্গাপুর থেকে নিয়েছেন থার্মোকলের ওপর দুর্গা প্রতিমার কাটিং সহ থার্মোকলের বেশ কিছু কাজ। বাদ যায়নি মালদা জেলা। সেখান থেকেও নিয়ে গিয়েছেন সোলার তৈরি চেন, চাঁদমালা সহ বেশ কিছু সামগ্রী। দুর্গাপুজোর প্রধান উপকরণ পদ্মফুল ছাড়াও বেলপাতা,দুর্বা,তুলসী সবই এখন বিদেশে যায়। মায়ের প্রতিমা গত বছর কুমোরটুলি থেকে আকাশপথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিষয়টি খরচ সাপেক্ষ এবং অন্যান্য সমস্যা থাকায় প্রতিবছর সেটা সম্ভব না হওয়ায় এ বছরও ওই প্রতিমাতেই পূজিত হবেন মা।
এবারের দুর্গাপুজোয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লর্ড মেয়র, স্থানীয় মেম্বার অফ পার্লামেন্ট সহ প্রশাসনিক কর্তারা।পুজোর চারটে দিন মহিলারা বাঙালি রীতিনীতি মেনেই নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোয় অংশ নেন। চলে দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভোজন রসিক বাঙালির অন্যতম খাবার হিসেবে খিচুড়ি, সব্জি, চাটনি, পাপড় সহ বিভিন্ন বাঙালি পদ রান্না করা হয়। পুজোয় অংশগ্রহণকারী বিদেশিনী জ্যানেট সিয়ারার এই পুজো প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, তিনিও এই পুজোয় খুবই আনন্দ উপভোগ করেন। একসাথে গান বাজনা খাওয়া দাওয়া, এ এক দারুণ অনুভূতি। কলকাতার বাসিন্দা ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী মেধা চক্রবর্তীর কথায়,বাড়ি থেকে বিদেশে আসার পর গত বছর ছিল এখানে আমার প্রথম পুজো। প্রবাসী সাংস্কৃতিক সংঘের দৌলতে প্রথম দুর্গা পুজোয় এত আনন্দ উপভোগ করবো ভাবতে পারিনি।এখানকার মানুষজন খুবই ভালো এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। পুজোর খাওয়া দাওয়া অনুষ্ঠান সমস্ত কিছু বাড়ির মতোই।