সংক্ষিপ্ত

হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০০ তম আবির্ভাব তিথি উপলত্ক্ষ্যে, মতুয়া ধর্ম মহামেলা ২০২২-এ (Matua Dharma Maha Mela 2022) ভার্চুয়াল বক্তৃতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মতুয়া সমাজের মন জয়ে, কী বললেন তিনি? 
 

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে, মতুয়া মহাসমাজকে নাগরিকত্ব দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকে অনেকগুলি দিন কেটে গিয়েছে, নাগরিকত্ব দানের কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। লাগু হয়নি সিএএ। এই অবস্থায় গত ক্ষোভ দেখা গিয়েছে মতুয়া সমাজে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার, হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০০ তম আবির্ভাব তিথিতে, মতুয়া সমাজের মন জয়ের চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মতুয়া ধর্ম মহামেলা ২০২২-এ ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। কী বললেন তিনি? আসুন দেখে নেওয়া যাক - 

বরাবরই আপন করে নিয়েছে ঠাকুরবাড়ি

এদিন 'জয় হরিবোল' ধ্বনিতে বক্তৃতা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অল্প অল্প আটকালেও, বাংলাতেই বললেন প্রথম লাইন। হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০০ তম আবির্ভাদ তিথি উপলক্ষ্যে মতুয়া মহাসমাজের সকলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। ২০২১ সালে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন, বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, গুরুচাঁদ ঠাকুরের সেই ধাম থেকে তিনি অনেক আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। আর, ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ি যে বরাবরই তাঁকে আপন করে নিয়েছে, অনেক ভালবাসা দিয়েছে, তাও জানাতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবন ও মূল্যবোধ

তিনি আরও বলেন, সমাজে এখন স্বার্থপরতা বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে ভাষা, ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ। সমাজকে ভাগ করার চেষ্টা চলছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবন ও মূল্যবোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই মূল্যবোধেই তাঁর সরকার 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস'এর নীতি নিয়েছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে সকলের বিকাশের চেষ্টা করছে।

মহিলাদের জন্য সামাজিক লড়াই 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহিলাদের অধিকারের জন্য, তাঁদের সম্মানের জন্য সামাজিক লড়াই করেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর। তাঁর সময়ে মেয়েদের জন্য স্কুল খুলেছিলেন। এর থেকেই তাঁর মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয় পাওয়া যায়। মোদী জানান, আজকের ভারতে মহিলারা পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। তিনি মনে করেন, হরিচাঁদ ঠাকুরের দেখানো পথে চলতে পেরেছেন তাঁরা, তাঁকে যোগ্য সম্মান জানাতে পেরেছেন। নরেন্দ্র মোদী আরও জানান, কেন্দ্রের যে সমস্ত জনকল্যানমুখী যোজনা রয়েছে, তার সুবিধা যাতে সকল মতুয়া পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়, তার জন্য তাঁর সরকার সর্বদা চেষ্টা করে চলেছে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। 

ঈশ্বর প্রেমের পাশাপাশি

স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের এই সময়ে, হরিচাঁদ ঠাকুরের দেওয়া আরেকটি বার্তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী।  তিনি বলেন, ঈশ্বরে প্রেমের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও সমাজের প্রতি আমাদের যে কর্তব্য রয়েছে, সেগুলি পালনেও বিশেষ জোর দিয়েছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর। এই যে কর্তব্যবোধের কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি, সেই কর্তব্যবোধকে দেশ গঠনের কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন মোদী।

মতুয়াদের প্রতি মোদীর আহ্বান

বক্তৃতার একেবারে শেষে, মতুয়া সমাজের প্রতিও বিশেষ আবেদন রাখেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, সমাজে যেখানে যেখানে অন্যায় হচ্ছে, সেখানে রুখে দাঁড়াতে হবে। হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। 'ভোকাল ফর লোকাল'কে নিজেদের জীবনের অংশ করে তুলতে হবে। স্থানীয় স্তরে যে সব পণ্য তৈরি হচ্ছে, সেই সকল পণ্যই কেনা উচিত। সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে, সব পদক্ষেপ নেওয়ার আগে মতুয়া সমাজকে রাষ্ট্রের কল্যানের কথা মাথায় রাখার আহ্বান জানান প্রদানমন্ত্রী।