সংক্ষিপ্ত
- মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সপরিবার স্কুল শিক্ষক খুনের ঘটনা
- নিহতের বাবা এবং এক বন্ধুকে আটক করল পুলিশ
- এখনও খোলেনি রহস্যের জট
- পুলিশকে সাহায্য করতে পৌঁছল সিআইডি
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সপরিবার স্কুল শিক্ষক খুনের ঘটনায় নিহত বন্ধুপ্রকাশ পালের বন্ধু শৌভিক বণিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল পুলিশ। একই সঙ্গে ওই স্কুল শিক্ষকের বাবা অমর পালকেও আটক করা হয়েছে। এই দু' জনকে জেরা করেই হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। চার দিন কেটে গেলেও এখনও ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় জেলা পুলিশের উপরেও চাপ বাড়ছে। পুলিশকে সাহায্য করতে ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছেছে সিআইডি-র একটি দল। লেবুবাগানে নিহত স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক টিমও।
নিহত শিক্ষকের সঙ্গে বীরভূমের রামপুরহাটের বাসিন্দা শৌভিক বণিক ওরফে দীপের যে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিবাদ চলছিল, তদন্তে নেমে তা জানতে পারে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এক সময় সাগরদিঘিতে শৌভিক এবং স্বপন কর্মকার নামে আরও এক যুবকের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন নিহত শিক্ষক। সেই সময়ই তিনি ব্যবসার জন্য ধার করে শৌভিককে ছ' লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা শৌভিক ফিরিয়ে দেয়নি বলেই জানা গিয়েছে। যা নিয়ে দু' জনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই গন্ডগোল চলছিল। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাতে বীরভূম থেকে শৌভিক বণিককে আটক করে পুলিশ।
এর পাশাপাশি নিহত স্কুল শিক্ষকের বাবা অমর পালকে আটক করেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ এবং সিআইডি। বন্ধুপ্রকাশবাবু তাঁর বাবার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সন্তান। সম্পত্তি নিয়ে বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল বলে খবর। সেই সূত্রেই অমরবাবুকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার শ্রী মুকেশ কুমার বলেন,'প্রথমে চারজনকে আটক করা হয়েছিল। তার মধ্যে দু' জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের বাবা ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে আটক করে ম্যারাথন জেরা চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি এখনই বলা সম্ভব নয়।' বৃহস্পতিবার রাতেই জিয়াগঞ্জ থানায় জেলার পদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক শেষ করে ঘটনাস্থলে যান আইজি ( মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্য ও এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সঞ্জয় সিং। কিন্তু তদন্তের বিষয়ে মুখ কেউই মুখ খোলেননি।
অন্যদিকে ওই শিক্ষকের স্ত্রীর হাতের লেখা বলে দাবি করে যে নোট পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেছে, তাতে দাম্পত্য জীবনের অশান্তির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। আদৌ ওই হাতের লেখা বন্ধুপ্রকাশবাবুর স্ত্রীর কি না, এবং সত্যিই তাই হলে এই খুনের পিছনে সাংসারিক জীবনের টানাপোড়েন কোনওভাবে দায়ী কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। যদিও ওই নোটের লেখাকে বিশ্বাস করতে রাজি নয় নিহত স্কুল শিক্ষকের পরিচিতরা। মৃতের নিকটাত্মীয় বন্ধুকৃষ্ণ পাল বলেন,'বিউটির হাতের লেখা বলে যেটা প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে ,তা আদতে ওঁর লেখাই নয়। ওটা কেউ খুনের আগে উদ্দশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওখানে রেখে গিয়েছে। সঠিক তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হবে।'