সংক্ষিপ্ত
এবার বেসুরো হলেন ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়
তাঁর সুর অনেকটাই মুকুল রায় পুত্র শুভ্রাংশু রায়-এর মতো
তবে শুধুমাত্র কি তৃণমূলে ফিরতে চেয়েই তাঁর এই বেসুরো হওয়া
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কিন্তু বলছেন কেলেঙ্কারি ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকতে পারে তাঁর
এবার বেসুরো রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়-ও। তবে সোনালী গুহ, বাচ্চু হাঁসদাদের মতো সরাসরি তৃণমূলে ফেরার কথা অবশ্য বলেননি তিনি। তাঁর সুরটা অনেকটাই মুকুল রায় পুত্র শুভ্রাংশু রায়-এর মতো। মঙ্গলবার, কারোর নাম না করে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে একটা বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গে প্রাক্তন বনমন্ত্রী। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরাট রাজনৈতিক জল্পনা।
এদিন টুইট করে 'সমালোচনা তো অনেক হল' শিরোনাম দিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যা লিখেছেন, তার সারমর্ম হল, মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসা মমতা সরকারের সমালোচনা করা উচিত নয় বিজেপি রাজ্যনেতাদের। কথায় কথায় দিল্লি দৌড়ানো আর ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের ভয় দেখানো বাংলার মানুষ ভালভাবে নিচ্ছেন না। রাজনীতি ভুলে গিয়ে কোভিড এবং সাইক্লোন যশ-এ বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বিজেপি নেতাদের, এমনটাই বার্তা দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কযেকদিন আগে মুকুলরায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়-ও ফেসবুকে বিজেপি নেতাদের কার্যত একই বার্তা দিয়েছিলেন। তিনিও বলেছিলেন মানুষের রায়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের এইভাবে একবগ্গা সমালোচনা ঠিক নয়। তারপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে যান শুভ্রাংশুর মা-কে দেখতে। সেই থেকে মুকুল ও তাঁর পুত্রের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজীবও সেই পথে নাম লেখালেন কি না, এদিনের পর সেই চর্চাও শুরু হল। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজীবের টুইটের জবাবে কটাক্ষ করে লিখেছেন, নতুন দলেও কি তাঁর দমবন্ধ লাগছে? গেরুয়া শিবিরেও কি তিনি কাজ করতে পারছেন না?
তবে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের বার্তার পিছনে শুধু যে শুভ্রাংশুর সুর রয়েছে, তা কিন্তু মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁরা উল্লেখ করছেন আরেক সম্ভাবনার কথা। যে সাইক্লোন যশ বিপর্যয়ের কথা তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেছেন রাজীব, সেই সাইক্লোনে দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু জায়গায় বাঁণধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে এলাকার পর এলাকা। কেন প্রতি বছর বাঁধ মেরামতের পরও বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, এই নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে সাইক্লোন আমফানে পড়ে যাওয়া গাছগুলিও বনদপ্তর থেকে কোথায় উধাও হয়ে গেল, সেই বিষয়েও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দল ছাড়ার সময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়ই ছিলেন বনমন্ত্রী, তার আগে তাঁর হাতে ছিল সেচমন্ত্রক। তাহলে কি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও কেলেঙ্কারি ধরে পড়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে, তা থেকেই কি বাঁচতে মমতা সরকারের বিরোধিতা করতে বারণ করছেন তিনি রাজ্য বিজেপিকে?