সংক্ষিপ্ত

উচ্চশিক্ষিত এই চোরের কাণ্ডকারখানা দেখে শুরুতে হতবাক হয়ে যান পুলিশ কর্মীরাও। জোর চর্চা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এদিকে সম্প্রতি ঘাটাল বিদ্যুৎ দফতরের এক মহিলা কর্মীর বাড়িকে চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়ে সৌমাল্য।

করোনাকালে আর্থিক মন্দায় জর্জরিত হয়েছে গোটা সমাজ। আগের থেকে বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। কিন্তু পেটের দায়ে নয়, শখের কারণেই চুরি করার কথা শুনেছেন কখনও? শুনতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে (Ghatal in West Midnapore district)। লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরির অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছে চোর। কিন্তু চোরের পরিচয় জেনেই চোখ কপালে তুলছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। তদন্তে নেমে জানা যায় ধৃত চোর নাম সৌমাল্য চৌধুরী। সে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (University of Burdwan) থেকে ইংরেজিতে নাকি এমএ পাস (MA in English) ! শুধু তাই নয়,   সে নাকি আবার খড়গপুরের দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে (South Eastern Railway) কর্মী। এমনকী তার পারিবারিক অবস্থাও বেশ স্বচ্ছল। বাবা পূর্ত দপ্তরের অবসর প্রাপ্ত কর্মী। কিন্তু চুরিই নাকি নেশা সৌমাল্যর। এখনও পর্যন্ত ১৭০টির বেশি চুরি করেছে সে।

এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, তার বাবা কাজের সূত্রে আসানসোলে থাকার সময় বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে রেলওয়ে অস্থায়ী এক কর্মী হিসাবে সৌমাল্যর কাজের ব্যবস্থা করে দেন। সেই কাজ নাকি সৌমাল্যর আর ভাল লাগছিল না। সেই কারণে রেলের কাজ ছেড়েও দেন তিনি। তারপরই এলাকার এক যুবকের হাত ধরে চুরি বিদ্যায় হাতেখড়ি সৌমাল্যর। শুরু শুরুতে তার সাথে চুরি করেই হাত পাকিয়েছিল সৌমাল্য। পরবর্তীতে নিজেই নামে ময়দানে। তবে সৌমাল্যর পরিবারের দাবি, এক বিরল মানসিক রোগের শিকার ওই যুবক। আর সেই কারণেই এই সমস্ত অদ্ভূত কাজ করে বেড়াতে সে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে হাওড়ার আন্দুলের একটি ফ্ল্যাট থেকে ১০ লক্ষ টাকা সোনার গহনা চুরি করেছে সে। এরপর সৌমাল্যকে পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই জামিনে মুক্ত হয়ে যায় সে। এরপরই ফের নামেন চুরির রাস্তায়। আসলে সৌমাল্য দাবি চুরি তার নেশা নয় পেশাও বটে।

আরও পড়ুন-অকাল বর্ষণে ভাসছে বাংলা, মধ্যবিত্তের চিন্তা বাড়িয়ে ফের বাড়তে পারে শাক-সব্জির দাম

এদিকে এই উচ্চশিক্ষিত চোরের কাণ্ডকারখানা দেখে শুরুতে হতবাক হয়ে যান পুলিশ কর্মীরাও। জোর চর্চা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এদিকে সম্প্রতি ঘাটাল বিদ্যুৎ দফতরের এক মহিলা কর্মীর বাড়িকে চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়ে সৌমাল্য। সূত্রের খবর, ঘাটাল পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কোন্নগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন ওই মহিলা কর্মী। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি বাড়িতে চাবি দিয়ে তিনি গিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দফতরে। কর্মস্থল থেকে ফিরে দেখেন, বাড়ির চাবি ভাঙা, এমনকী ঘরের ভিতর থাকা লক্ষাধিক টাকার গয়না খোয়া গিয়েছে।তারপরই খবর যায় পুলিশে। এরপরই ধরা পড়ে সৌমাল্য। গতকালই সৌমাল্যকে ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।