সংক্ষিপ্ত

শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় খারিজ করে জানিয়েছে, ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের কোনও সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে না কলকাতা হাই কোর্টের মতো অন্য রাজ্যের আঞ্চলিক আদালত। চাইলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আদালতে (দিল্লি হাই কোর্টে) ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারেন আলাপন।

মামলা স্থানান্তর করা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata High Court) জয় পেয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Bandyopadhyay)। কিন্তু, সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) এবার ধাক্কা খেলেন তিনি। শৃঙ্খলাভঙ্গের মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায় খারিজ হল শীর্ষ আদালতে। পশ্চিমবঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত করা মামলা কলকাতায় রাখতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই মামলা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ কলকাতা (Kolkata) থেকে দিল্লিতে (Delhi) সরাতে নির্দেশ দেয়। সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন আলাপন। তখনই কলকাতা হাইকোর্ট সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। কিন্তু, আজ সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, শৃঙ্খলাভঙ্গের আবেদন শোনার এক্তিয়ার নেই কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে এই মামলার শুনানি হবে দিল্লিতেই। 

শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় খারিজ করে জানিয়েছে, ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের কোনও সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে না কলকাতা হাই কোর্টের মতো অন্য রাজ্যের আঞ্চলিক আদালত। চাইলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আদালতে (দিল্লি হাই কোর্টে) ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারেন আলাপন। তবে আলাপন মামলার শুনানি কলকাতায় হবে না কি দিল্লিতে, সে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে ‘ক্যাট’-এর কলকাতা বেঞ্চকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন- শুক্রবারই কলকাতায় ভার্চুয়ালি পা মোদীর, উদ্বোধন হতে চলেছে নতুন ক্যান্সার হাসপাতালের

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল রাজ্য-কেন্দ্র সঙ্ঘাত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য গতবছর মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে পূর্ণ সময় থাকেননি বাংলার তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন। সেই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনে কেন্দ্র। দিল্লিতেও তাঁকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু, দিল্লি যাওয়ার পরিবর্তে বর্ধিত মেয়াদ পর্যন্ত কাজ না করে নির্দিষ্ট দিনেই অবসর নিয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৩১ মে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তারপরই আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু করেছিল কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রক।

আরও পড়ুন- কোভিডে তৃতীয়বার আক্রান্ত অগ্নিমিত্রা পাল, টুইটে কাদেরকে কোয়ারান্টিনে যেতে বললেন বিজেপি নেত্রী

এরপর সেই তদন্ত খারিজের আর্জি জানিয়ে ক্যাট-এর কলকাতা বেঞ্চের দ্বারস্থ হন আলাপন। জানিয়েছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে সেগুলি থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু, সেই সমস্যার সমাধানের আগেই সেই মামলা স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লিতে। এরপর ওই মামলা দিল্লি থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলাপন। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে ওই মামলা কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়। 

তারপর অবশ্য চুপ থাকেনি কেন্দ্রীয় সরকার। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, আলাপনের বিরুদ্ধে শুনানি দিল্লিতেই হওয়া উচিত। চার্জশিট যখন দিল্লি থেকে গিয়েছিল, দিল্লিতেই মামলার শুনানি হবে। সিএটি-র নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হলেও, তা দিল্লি হাইকোর্টেই জানাতে হবে। কলকাতায় নয়। এনিয়ে এবার দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন আলাপন।