সংক্ষিপ্ত
মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় অনুপস্থিত স্কুলের ফার্স্ট গার্ল। কিন্তু কেন সে অনুপস্থিত তা খোঁজ নিতে গিয়েই চোখ কপালে ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের। দেখা যায় লকডাউনে যে সময় স্কুল বন্ধ ছিল, সেই সময় বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রীর।
দেশের সমস্ত মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার(Government)। যে সিদ্ধান্তকে সাধুবাদও জানিয়েছে দেশের শিক্ষাবিদদের প্রায় সকলেই। কিন্তু তারপরেও নাবালিকা বিয়ে(Minor marriage) ঠেকাতে যে ব্যাপক জনসচেতনতার প্রয়োজন তার খামতি যেন রয়েই যাচ্ছে। এমতাবস্থায় নাবালিকা বিয়ে নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে গেল বাংলার বুকে। অবাক করা এক ঘটনা ঘটে গেল মালদহের(Malda) স্কুলে। মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায়(Madhyamik test) অনুপস্থিত স্কুলের ফার্স্ট গার্ল(First girl of school)। কিন্তু কেন সে অনুপস্থিত তা খোঁজ নিতে গিয়েই চোখ কপালে ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের। দেখা যায় লকডাউনে(Lockdown) যে সময় স্কুল বন্ধ ছিল, সেই সময় বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রীর। লকডাউনে দারিদ্রতা বেড়ে যাওয়াতেই মেয়ের আগাম বিয়ে, দাবি পরিবারের। তবে বিয়ে যার সাথে হয়েছে সেও ওই ছাত্রীরই সহপাঠি বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে লকডাউনের কারণে যে স্কুল ছুটের পরিমাণ গোটা রাজ্যজুড়েই কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে তা মেনে নিয়েছে রাজ্য প্রশাসনও। এমনকী অর্থাভাবের কারণে যে বাংলার একটা বড় অংশের নাবালিকাদের ছাত্রাবস্থাতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। আর এখানেই বাড়তে থাকে সবথেকে বেশি উদ্বেগ। কিন্তু তাই বলে একেবারে স্কুলের ফার্স্ট গার্লের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বিস্মৃত হয়েছে মালদহের কমলাবাড়ী হাইস্কুলে শিক্ষকেরা। ঘটনা জানা মাত্র মেয়েটির শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছে যান তাঁরা। অভিভাবকদের সঙ্গেও ছাত্রীর পড়াশোনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তাঁরা। তবে নতুন ছেলে-বউকে স্কুলে পাঠাতে আপত্তি জানায়নি পরিবার। এদিকে পরিবারের সমর্থন ও শিক্ষকদের আশ্বাস পওয়ায় স্বভাবতই খুশি ওই ছাত্রী।
আরও পড়ুন-পুরভোটের আবহে ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা, কেন্দ্রের উদ্বেগজনক তালিকায় নাম তিলোত্তমার
বর্তমানে স্কুলে আলাদা করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রীর। শ্বশুরবাড়ির উৎসাহ পেলে আগামীতে পড়াশোনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় স্কুলের ওই মেধাবী পড়ুয়া। ভবিষ্যতে সে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে বলেও জানিয়েছে। সূত্রের খবর, ছাত্রীটির আদি বাড়ি যদুপুর গ্রামে। সেখানে বাবা মাসুদুর রহমানের রয়েছে ছোটখাটো ডেকোরেটর ব্যবসা। ওটাই পরিবারের মূল রোজগারের রাস্তা। কিন্তু করোনাকালে প্রায় দু'বছর উৎসব-অনুষ্ঠান বন্ধ। তারজেরে চরম অর্থ সঙ্কটে পড়ে গোটা পরিবার। এদিকে এদিকে চার মেয়ে, আর দুই ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে আগেই।
আরও পড়ুন-কাটোয়া গুলি কাণ্ডে নয়া মোড়, অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা, প্রেমিকার পর গ্রেফতার প্রেমিক লালচাঁদ
এমতাবস্থায় মেজ মেয়ের বিয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসতেই আর না করেননি মাসুদুর। তবে ছাত্রীর স্বামী বর্তমানে চায়না তাঁর স্ত্রী পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাক। তবে শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যরা তার পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। তবে এর মধ্যে সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বিয়ের আগে নিজের স্বামীকে চিনত না ওই ছাত্রী। বিয়ের পর দেখা যায় তারই স্কুলের ক্লাসমেটের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে তাঁর। তবে তার স্বামী তার মতো মেধাবী নয় বলেই জানা স্থানীয় সূত্রে খবর। অন্যদিকে বিয়ে হলেও দুজনের বিয়ের বয়েসের বেড়াজাল নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।