সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ভোটের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ করল তৃণমূল। ইস্তেহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর। তার মধ্যে অন্যতম হল নিকাশি, সড়ক পরিকাঠামো ও জল সরবরাহ।
কলকাতা পুরনিগমের ভোটের পর এবার রাজ্যের বাকি চারটি পুরনিগমের ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। চলতি মাসের ২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর ও শিলিগুড়ি পুরনিগমে ভোট রয়েছে। আর ভোট গণনা ২৫ জানুয়ারি। কিন্তু, রাজ্যে যেভাবে করোনার সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে তাতে ভোট আদতে হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই ভোট নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে করোনার দাপটের জেরে ২২ জানুয়ারি ভোট নিয়ে একটা সংশয় রয়েছে। কিন্তু, তাহলেও প্রচার করতে পিছপা হচ্ছে না কোনও রাজনৈতিক দলই। জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিধাননগর (Bidhannagar), শিলিগুড়ি (Siliguri) এবং চন্দননগর (Chandannagar) পুরনিগমের ভোটের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ করল তৃণমূল।
শিলিগুড়ি পৌরনিগম সাধারণত লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত। আর সেখানে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল। সেই এলাকার কথা মাথায় রেখে এবার ইস্তেহারও প্রকাশ করেছে তারা। ইস্তেহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর। তার মধ্যে অন্যতম হল নিকাশি, সড়ক পরিকাঠামো ও জল সরবরাহ।
নিকাশির ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে
- ১) শহরে জমা জলের সমস্যা দূর করতে ২টি অতিরিক্ত ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন ও ২টি জেট কাম সাকশন মেশিন থাকবে
- ২) জিরো ব্লকেজ নিশ্চিত করতে ক্যাচ পিট ও ভূগর্ভস্থ নর্দমা লাইন-সহ মূল জায়গাগুলির নিয়মিত যান্ত্রিক সুবিধাসহ পলিমুক্ত এবং পরিষ্কার করা
সড়ক পরিকাঠানোর ক্ষেত্রে
- ১) শহরের সব রাস্তা, ফুটপাথ ও ডিভাইডার নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি আগামী ৫ বছরে বর্তমান কাঁচারাস্তা ও ভাঙা রাস্তায় কালো টপিং
- ২) রাস্তার পাশে ফুটপাথ নির্মাণ ও ৫ বছর ধরে জনসাধারণের সুবিধার্থে ৩টি চলান সিঁড়ি-সহ ফুট ওভারব্রিজ তৈরি করা হবে
- ৩) কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কাছে একটি বহুতল পার্কিং লট এবং বিধান মার্কেট একটি ভূগর্ভস্থ পার্কিং এলাকা নির্মাণের পাশাপাশি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরির জন্য অতিরিক্ত স্থানগুলি চিহ্নিত করা হবে
- ৪) অটো রিকশা ও ই-রিকশার জন্য স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে
এছাড়াও তৈরি করা হবে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন, প্রতিটি পরিবারের জন্য অবিচ্ছিন্ন পানীয় জলের পরিষেবার জন্য ১০০ শতাংশ কলের জলের সংযোগের সুবিধা দেওয়া হবে। তৈরি হবে ৫টি বর্জ্য শোধনাগার ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। তার সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আরও অনেকগুলি বিষয়ে। নাগরিক বান্ধব শিলিগুড়ি গড়ার লক্ষ্যে রাস্তায় আলো লাগানো হবে, প্রধান বাজারের পুনর্গঠন করা হবে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হবে সিসিটিভিও।
যদিও বিরোধীদের দাবি, এরকম প্রতিশ্রুতি আগেও বহু বার দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে করোনা উদ্বেগ বাড়তে থাকায় ভোটের ভবিষ্যৎ যে ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই চার পুরসভার ভোট নিয়ে মামলা এখনও আদালতে আটকে রয়েছে। ভোট পিছনো হবে নাকি নির্ধারিত দিনই হবে সেই বিষয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত। যদিও কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় পরিস্থিতির ঘোষণা না করলে কোনওভাবেই ভোটের দিন পিছতে পারবেনা তাঁরা। কারণ সাধারণ নিয়মে একবার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেলে তা আর পিছানো যায় না, এমনটাই দাবি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের।