সংক্ষিপ্ত
নিজের একসময়ের পিতৃ-পুরুষের ভিটে মুর্শিদাবাদের কান্দি শহরে। কার্যত নস্টালজিয়ায় ভাসলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় করতে বিরোধী শক্তিদের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিতবহ বার্তাও দিতে শোনা গেল তাঁকে।
শনিবার (Saturday) কলকাতায় (Kolkata) বাংলাদেশের (Bangladesh) ডেপুটি হাইকমিশনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের ( Bangladesh Liberation War) ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। আর সেই উপলক্ষ্যে সটান বাংলাদেশ থেকে ঝটিকা সফরে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) এসে হাজির হলেন সে দেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ সাহারিয়ার আলম (Md. Shahriar Alam)। নিজের একসময়ের পিতৃ-পুরুষের ভিটে মুর্শিদাবাদের কান্দি শহরে। কার্যত নস্টালজিয়ায় ভাসলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় করতে বিরোধী শক্তিদের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিতবহ বার্তাও দিতে শোনা গেল তাঁকে।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মহম্মদ সাহারিয়ার আলম বলেন, "ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক খুবই ভালো। হয়তো কিছু বিষয়ে এই দুই প্রতিবেশী দেশের সামান্য ইস্যু রয়েছে, সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করা হবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। এই দুই দেশে দারিদ্র একটি বড় সমস্যা। সমাধান করার জন্য দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরাও সর্বতোভাবে চাই ভারত-বাংলাদেশ একজোটে এই ধরনের ইস্যুভিত্তিক সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করুক। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন যেমন হবে ভারতও আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাবে।"
আরও পড়ুন- সুর হারিয়ে চরম দুরবস্থায় মুর্শিদাবাদের মুসলিম ঘরানার মহিলা শিল্পীরা
বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী দুই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে জোর দিয়ে বলেন, "আগামী দিনের চেষ্টা করতে হবে উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যাতে আরও সহজ থেকে সহজতর করা যায়। অবশ্যই সে ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে খতিয়ে দেখতে হবে।" এদিকে মুর্শিদাবাদে নিজের পিতৃ-পুরুষের বাসভূমিতে এসে খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর বাবা শামসুদ্দিন আহমেদ ও তাঁর পূর্বপুরুষ এক সময় মুর্শিদাবাদের কান্দি শহরে বসবাস করতেন। কান্দি জেমো এন এন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তাঁর বাবা। বাবাকে নিয়েই মহম্মদ সাহারিয়ার আলম কান্দি শহর ঘুরে দেখেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বহুদিন ধরে আমার বাবা একটি বারের জন্য তার ও তাদের পূর্বপুরুষের এই শহর মুর্শিদাবাদের কান্দিতে আসতে চাইছিলেন। আমি সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারলাম এদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে। এর থেকে বড় পাওনা আর কি হতে পারে। আদতে দুই দেশের মানুষের অন্তরাত্মা তো এক। তাকে আলাদা করা যায় না।"
বাবাকে নিয়ে কান্দি কলেজে কিছুক্ষণ সময় কাটান মহম্মদ সাহারিয়ার আলম। বলেন, "দীর্ঘ দিনের মনের বাসনা পূরণ হল। মনে হচ্ছে যেন শৈশবে ফিরে গেলাম। যে কটা দিন বাঁচব এই স্মৃতি মনের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।" এরই মধ্যে ৫০০-র মধ্যে ৪৯৯ পেয়ে ২০২১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মণীন্দ্র চন্দ্র গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী রুমানা সুলতানার সঙ্গে দেখা করেন মহম্মদ সাহারিয়ার আলম। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টি ও ওপার বাংলার ইলিশ উপহার দেন তিনি। সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে যেন নতুন করে সম্পর্কের এক মাত্রা তৈরি হল।