সংক্ষিপ্ত
বছরখানেক আগে রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন প্রাক্তন আমলা জহর সরকার। সোমবার দলের মধ্যে দুর্নীতির বিষয় কথা বলতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।
জহর সরকারের মন্তব্যে বিড়ম্বনায় দলীয় নেতৃত্ব। সোমবার তাঁর দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্যের পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলকে প্রকাশ্যে দলের 'পচা অংশ' বলায় একদিকে যেমন অস্বস্তি বেড়েছে দলের মধ্যে, তেমনই বিরোধী শিবিরের কাছে এই মন্তব্য এক হাতিয়ারসম। টুইট পালটা টুইটের ভিড়ে ক্রমেই বাড়ছে বিতর্ক।
বছরখানেক আগে রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন প্রাক্তন আমলা জহর সরকার। সোমবার দলের মধ্যে দুর্নীতির বিষয় কথা বলতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। তৃণমূলের দুই দুঁদে নেতার উদাহরণ টেনে তিনি পরিষ্কার বলেন, ‘‘পচে যাওয়া অংশ বর্জন করতে হবে।’’ এখানেই শেষ নয়। তিনি প্রকাশ্যে এও বলেন, যে তাঁর আত্মীয় ও বন্ধুমহল থেকে তাঁর কাছে বারবার তৃণমূল ছাড়ার পরামর্শও আসছে। সোমবার জহর সরকারের এই মন্তব্যের পর থেকেই তৃণমূলের বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়। অনেকেই জহর সরকারের পদত্যাগের দাবি তোলেন। আবার অনেকে বিষয়টিকে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন।
এবিষয় তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের স্পষ্ট জানিয়েছেন, "প্রয়োজন পড়লে জহরবাবুর বক্তব্য নিয়ে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে আলোচনা করা হবে। তবে এবিষয় এখনই কিছু বলছি না।" জহর সরকারের মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন," জহরবাবু অভিজ্ঞ লোক, ওঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য থাকতেই পারে, কিন্তু দলে থেকে তা প্রকাশ্যে বলার অধিকার আছে কি না সে বিষয়ও ভেবে দেখা ওঁর উচিত ছিল।
সাংসদ সৌগত রায় আবার সরাসরি জহর সরকারের পদত্যাগের কথা বলেছেন। তাঁর সোজা কথা,"সাহস থাকলে জহরবাবু পদত্যাগ করুন।"
জহর সরকার অবশ্য যাবতীয় বিতর্ক প্রসঙ্গে পরিষ্কার জানিয়েছেন, "আমাকে যিনি এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি বললে আজই পদত্যাগ করতে পারি।" উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জহরকে রাজ্যসভায় যাওয়ার প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন। অবিলম্বে সেই প্রস্তাব গ্রহণও করেছিল জহরবাবু।
অপরদিকে জহর সরকারের এই মন্তব্য বিরোধীদের হাতে হাতিয়ারের ন্যায়। কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য ইতিমধ্যে এই প্রসঙ্গে টুইট করেছেন ‘‘জহর সরকারের মতো একজন আপাত নিরীহ মানুষও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হেফাজত থেকে নগদ উদ্ধারের ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন। এতেই বোঝা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে বিষয়টি কত খারাপ জায়গায় যাচ্ছে।"
আরও পড়ুন - এবার সিবিআই-এর নজরে অনুব্রতর চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কেষ্ট-ঘনিষ্ঠদের বাড়িতেও চলল অভিযান
জহর সরকার অবশ্য অমিত মালব্যের মন্তব্যের তীব্র বিরোধীতা করে বলেছেন,"তৃণমূল বলে নিজের বক্তব্য রাখতে পেরেছি, বিজেপিতে কারও ক্ষমতা আছে দু’টি বড় শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের দলের অসাধু আঁতাতের কথা বলার?"
তবে জহর বক্তব্যে এও স্পষ্ট করেন আত্মসম্মান তাঁর কাছে সব থেকে বড়। কোনও রকমের সম্মানহানি হলে অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন তিনি।
আরও পড়ুন - শাহ-এর বিরুদ্ধে সুর চড়াতেই ফের ইডির তলব! এনসিআরবি-এর তথ্য তুলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে কটাক্ষ অভিষেকের