সংক্ষিপ্ত

জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি পরিদর্শন করতে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা টাঙ্গাকে একমাত্র পরিবহণ হিসেবে বেছে নেন। ঘোড়ায় টানা এই টাঙ্গাকে কেউ আবার টমটমও বলেন। বাহারি টাঙ্গায় চেপে পরিবারের সঙ্গেই হোক কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থানগুলি পরিদর্শন করেন পর্যটকরা। 

মুর্শিদাবাদের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে টাঙ্গা। ঘোড়ায় টানা এই টাঙ্গা আজও নবাবী ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে। ফলে টাঙ্গাকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর ধুঁকতে বসেছে টাঙ্গা। খাবারের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যু হয়েছে বহু ঘোড়ার। এদিকে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আর সেকথা মাথায় রেখেই ঘোড়াদের বাঁচাতে এবার উদ্যোগ নিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। সোমবার বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি পরিদর্শন করতে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা টাঙ্গাকে একমাত্র পরিবহণ হিসেবে বেছে নেন। ঘোড়ায় টানা এই টাঙ্গাকে কেউ আবার টমটমও বলেন। বাহারি টাঙ্গায় চেপে পরিবারের সঙ্গেই হোক কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থানগুলি পরিদর্শন করেন পর্যটকরা। জেলার প্রায় সব পর্যটন স্থানেই দেখতে পাওয়া যায় টাঙ্গা। এদিকে করোনার প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আছড়ে পড়েছিল দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলি। এরফলে পর্যটক না থাকা চালকদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে ওঠে। টান পড়তে শুরু করে জীবিকায়। ফলে টাঙ্গা ছেড়ে পেটের দায় অনেকেই বেছে নিয়েছিলেন মিস্ত্রির কাজ। আবার কেউ হকারি শুরু করেন। 

আরও পড়ুন- আচমকা সনিয়াকে চিঠি লিখে কংগ্রেস ছাড়লেন সুস্মিতা দেব, তৃণমূলে যোগ নিয়ে জল্পনা

এদিকে এই পরিস্থিতিতে ঘোড়ার খাবার জোগান দিতেও সমস্যায় পড়েছিলেন টাঙ্গা মালিকরা। অর্থের অভাবে ঘোড়াদের ঠিক মতো খাওয়াতেন পারেননি তাঁরা। জানা গিয়েছে, একটি ঘোড়ার দৈনিক এক কেজি ধানের গুঁড়ো, এক কেজি ছোলা, এক কেজি ভুট্টার চুনি, গুড় দেড় কেজি এবং ধানের খড় লাগে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন একটি ঘোড়ার মোট ২০০ টাকার খাবার লাগে। এ প্রসঙ্গে টাঙ্গা মালিক প্রদীপ মালাকার ও রাহুল শেখ বলেন, "কিছু দিন দোকানদারের কাছ থেকে ধারে খাবার নিয়েছিলাম। কিন্তু দোকানদার আর ধারে খাবার দিচ্ছেন না। ফলে আমরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছি। চোখের সামনে পশুগুলো খাবারের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।" 

আরও পড়ুন- 'অটলজি আমাদের হৃদয়ে আছেন', বাজপেয়ীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির

ইতিমধ্যেই এলাকার পাঁচটি ঘোড়ার অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে। আরও বেশ কিছু ঘোড়া খুবই অসুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদ টাঙ্গা চালক ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখ। তিনি বলেন, "ঐতিহ্যের কথা ভেবে হোক কিংবা পশুগুলির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিজ্ঞান মঞ্চ খাবার দিয়ে ঘোড়াগুলিকে রক্ষা করতে চেয়েছে। এতে আমরা কৃতজ্ঞ।" টাঙ্গা মালিকদের হাতে ৩৫ কুইনন্টাল ঘোড়ার খাবার তুলে দিয়ে সংস্থার লালবাগ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত জি এম নূরুন্নবী আজাদ বলেন, "ওই খাবার ঘোড়ার জন্য বেশ কিছু দিন চলবে। আগামী দিনে ওই সাহায্য অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি আমরা।"

আরও পড়ুন- জ্বলল পুলিশের গাড়ি, প্রতিবাদের আগুনে ম্লান স্বাধীনতা দিবস, শিলং-এ জারি কারফিউ


YouTube video player