সংক্ষিপ্ত
অন্যান্য পুরসভার মতো এই পুরসভার মূল ইস্যু নাগরিক পরিষেবা। অতিমারির মধ্যে তুফানগঞ্জ পুরসভার কাজ নিয়ে সেভাবে খুশি নয় এই পুর এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও তুফানগঞ্জ শহরের মধ্যে এখনও অনেকটা এলাকা সেভাবে উন্নত নাগরিক পরিষেবা পায়নি। দেখলে মনে হবে এই সব এলাকা এখন যেন পঞ্চায়েত শাসনের মধ্যে পড়ে রয়েছে।
১৯৮৩ সালের ১০ মার্চ জন্ম নিয়েছিল তুফানগঞ্জ পুরসভা। এর অধীনে রয়েছে ২.৪৯ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা। ২০১১ সালের জন গণনা অনুযায়ী এখানে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা হল ২০,৯৯৮। এরমধ্যে ১০,৬৮৪ জন পুরুষ। শতাংশের হিসাবে এই সংখ্যাটা ৫১%। মহিলাদের সংখ্যা ১০,৩১৪ জন। শতাংশের হিসাবে এই সংখ্যাটা ৪৯%। শূন্য থেকে ৬ বছরের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা ১৬১৯। শিক্ষিত লোকের সংখ্যা ১৭,৭২৭। সন্দেহ নেই এই সংখ্যাটা এই সময়ে অনেকটাই বেশি। বিধানসভা আসনের হিসাবে তুফানগঞ্জ বিধানসভা আসনের অন্তর্গন্ত তুফানগঞ্জ পুর এলাকা। রাজনৈতিক দিক থেকে বরাবরই ফোকাসে থাকে তুফানগঞ্জ। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন বিজেপি প্রার্থী প্রসেনজিৎ বসাক অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁকে অপরহরণ করাও হয়েছিল। এই নিয়ে এলাকায় বেশ উত্তেজনা ছড়ায়। পরে অবশ্য ওই প্রার্থীকে পুলিশ থানায় দেখা যায়। তিনি দাবি করেন যে কীভাবে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল সেই কাহিনি তিনি থানায় জানিয়ে এসেছেন।
তুফানগঞ্জে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওয়ার্ড ৪,৫,৬ জয় তৃণমূলের, সকাল ৯ঃ২৪ মিনিট
তুফানগঞ্জে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওয়ার্ড ৪,৫,৬ জয় তৃণমূলের। ৪,৫,৬ ওযার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সনরিতা সাহা, অম্লান বর্মা, অন্তরা কুমার বর্মা জয়ী।
তুফানগঞ্জে পুরসভার মধ্যে রয়েছে মোট ১২ টি ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডগুলিতে মোট ৩৯ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। দেখা যাচ্ছে ৩ জন করে প্রার্থী রয়েছেন ১,২,৩,৪,৬ ৮, ৯, ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন ৫,৭ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। এই পুরসভায় মূলত লড়াইটা বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। যদিও কয়েকটি ওয়ার্ডে বাম ও কংগ্রেস তাদের উপস্থিতি জানা দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, পুরবোর্ড দখল করার ক্ষেত্রে সেটা যথেষ্ট নয় বলেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি।
২০১৫ সালে তুফানগঞ্জ পুরসভার ভোট হয়েছিল। তারপরে এই ২০২২-এ ভোট হচ্ছে। ২০২০ সালে পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুর প্রশাসক বসিয়ে পুরসভার কাজ পরিচালনা করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ফলাফলে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৯টি এবং বামেরা ৩টি ওয়ার্ড দখল করেছিল। কিন্তু, ২০১৫ সালের পর এই পুর এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও তুফানগঞ্জ বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি-র মালতীরাভা রায়। তিনি পেয়েছিলেন প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রণবকুমার রায় পেয়েছিলেন প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট। সুতরাং, বিগত বিধানসভা নির্বাচনের ফল বিচার করলে বিজেপি-র তুফানগঞ্জ পুরভোটে এগিয়ে থাকার কথা। তবে, তুফানগঞ্জে পুরভোটের দিন যেভাবে ব্যাপক ছাপ্পা ভোট হয়েছে তাতে প্রমাদ গুনছে বিজেপি। তাদের মতে, তুফানগঞ্জ পুরবোর্ড যদি এবারও তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকে তাহলে বুঝতে হবে মানুষ নয় ভোট হয়েছে সন্ত্রাস দিয়ে। কিন্তু, বিজেপি-র এমন অভিযোগকে পাত্তা দিতে রাজি নয় তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের সাফ দাবি নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে তুফানগঞ্জ পুরসভার বোর্ড নাকি তারাই গঠন করতে চলেছেন।
অন্যান্য পুরসভার মতো এই পুরসভার মূল ইস্যু নাগরিক পরিষেবা। অতিমারির মধ্যে তুফানগঞ্জ পুরসভার কাজ নিয়ে সেভাবে খুশি নয় এই পুর এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও তুফানগঞ্জ শহরের মধ্যে এখনও অনেকটা এলাকা সেভাবে উন্নত নাগরিক পরিষেবা পায়নি। দেখলে মনে হবে এই সব এলাকা এখন যেন পঞ্চায়েত শাসনের মধ্যে পড়ে রয়েছে। তুফানগঞ্জের মূল সমস্যা হল কর্মসংস্থান এবং ব্যবসায়ীক লেনদেন। এখানকার মূল অর্থনীতি দাঁড়িয়ে রয়েছে সুপারি চাষ, পানচাষের উপরে। কিন্তু,এর বাইরে সেভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থা তৈরি হয়নি এতদিনে। ছোটখাটো দোকানদারি, ব্যবসা চললেও ট্রান্সপোটেশনে রয়েছে বিস্তর সমস্যা। ফলে একস্থান থেকে অন্যস্থানে জিনিস পাঠাতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়।