সংক্ষিপ্ত
গরুর লেজ ধরে নদী পার হতে গিয়েছিলেন
স্রোতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু বৃদ্ধের
একটানা বৃষ্টিতে বাড়ছে বীরভূমের নদীগুলির জল
প্রশাসনের পক্ষ নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
একটানা বৃষ্টি চলছে। তার উপর প্রতি বছরের মতোই ঝাড়খণ্ড থেকে নেমে আসছে জলের স্রোত। ফলে জল বাড়তে শুরু করেছে বীরভূমের বিভিন্ন নদীতে। এর মধ্যেই হিংলো নদীর জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। শুক্রবার দুপুর থেকেই তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। শনিবার বিকেলের দিকে হিংলো জলাধার থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম রামচন্দ্র গড়াই। ৬৮ বছরের ওই বৃদ্ধের বাড়ি কাঁকড়তলা থানার বাবুইজোড় গ্রামে। পেশায় কৃষিজীবী রামচন্দ্র গড়াই শুক্রবার হিংলো নদীর পেরিয়ে চাষের কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময় নদীতে প্রায় একবুক জল ছিল। কিন্তু, ফেরার সময় জলস্তরের উচ্চতা বেড়ে যায়। কিন্তু তারপরেও গরুর লেজ ধরে নদী পার হতে পারবেন বলে ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু, মাঝ নদীতে এসে গরুর লেজ থেকে হাত খসে যায় তাঁর। তারপরই দলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিলেন তিনি।
ঝুঁকি নিয়ে চলেছেন গ্রামবাসীরা
এদিকে, বীরভূমের মুরারই ১ নম্বর ব্লকের পাগলা এবং বাঁশলৈ নদীর জলস্তরও বাড়তে শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নদী বাঁধ সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্কও করা হয়েছে।শনিবারই পাগলা নদীর তীরবর্তী দাদপুর গ্রাম এবং বাঁশলৈ নদীর তীরবর্তী রতনপুর ও কাহিনগর গ্রাম পরিদর্শন করেন বিডিও প্রণব চট্টরাজ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাহানাজ বেগম এবং সেচ দফতরের আধিকারিকরা।
প্রশাসনিক কর্তাদের হাতের কাছে পেয়ে, দাদপুর গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গতবছরই বন্যায় পাগলা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছিল। বাঁধের উপর পাকা রাস্তাও ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ ও রাস্তা দুইই পূনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন কোনও কাজই হয়নি। আর এখন নদীর জল বেড়ে গিয়ে ওই বাঁধের ফাটল দিয়ে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে।
বাঁশলৈ নদীর তীরের গ্রাম, রতনপুরের বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, মাটির বাঁধে ইতিমধ্য়েই ক্ষয় হতে শুরু করেছে। যেকোন মুহূর্তে তা ভেঙে গিয়ে গ্রামে হুহু করে জল ঢুকতে পারে। এমনকী, নদীর পারে বেশ কিছু থাকা বিদ্যুতের খুঁটিগুলিও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ভাঙ্গন শুরু হলে খুঁটি ভেঙে বিপত্তি বাড়তে পারে। অন্যদিকে, সুরবতী নদীর জল বেড়ে মহুরাপুর অঞ্চলের রুকুনপুর গ্রামের সেতু এখন জলের তলায় চলে গিয়েছে। গ্রামের মানুষ অবশ্য ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়েই পারাপার করছেন।
নলহাটি বিভাগের সেচ আধিকারিক সুজয় দাস জানিয়েছে, 'নদী বাঁধ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আনুমানিক খরচ পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও অনুমোদন আসেনি। তবে আপাতত যে সমস্ত এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে সেখানে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। বিডিও প্রণব চট্টরাজ বলেন, 'নদী ভাঙন রুখতে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এতে বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে'।