সংক্ষিপ্ত
হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দমদম সহ বিভিন্ন এলাকায় জল জমে রয়েছে। তার ফলে সপ্তাহের প্রথম দিনই কাজের বেরিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের জেরে রবিবার গভীর রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। রবিবার মধ্যরাত থেকে যে বৃষ্টি হয়েছে সোমবার সকালেও তা কমার নাম নেই। ভারী বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী একাধিক এলাকা। বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুজল জমে গিয়েছে। হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দমদম সহ বিভিন্ন এলাকায় জল জমে রয়েছে। তার ফলে সপ্তাহের প্রথম দিনই কাজের বেরিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। এদিকে আজ সারাদিন ধরেই বৃষ্টি হবে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
জলমগ্ন হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা। হাওড়া শহরের ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশ এলাকাই এখন জলমগ্ন। ইতিমধ্যে পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় টুলু পাম্প বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে বের করে দেওয়া হচ্ছে জল।
টানা বৃষ্টির জেরে টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল জমে রেল পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে পারে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল জমে যাওয়ার কারণে রেল পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। জবলপুর এক্সপ্রেস ছাড়া সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে সার্কুলার রেল পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারি নীরাজকুমার। তবে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। যদিও রেলের ট্র্যাকে জল জমে গেলে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
হাওড়ার পাশাপাশি একই ছবি দমদমেও। রাতভর ভারী বৃষ্টির ফলে জল জমেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। এর ফলে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। নিউটাউন থেকে হলদিরামের দিকে যাওয়া এবং ভিআইপি রোডের হলদিরাম থেকে নিউটাউন চিনারপার্কের দিকের আসার রাস্তা সম্পূর্ণ জলমগ্ন। বৃষ্টির চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
টানা বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন পানিহাটির বিভিন্ন এলাকা। হাঁটুজল পেরিয়ে বিটি রোড দিয়ে সপ্তাহের প্রথম দিন যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, পানিহাটি এলাকা বছরের ৬ মাস জলমগ্ন থাকে। আর এউ নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। যদিও এনিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। এ প্রসঙ্গে পানিহাটি পৌরসভার উপ মুখ্য প্রশাসক সোমনাথ দে বলেন, "চারিদিকে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে ফলে গঙ্গার জল বেড়েছে অনেকটাই। সে কারণেই জল নামতে কিছুটা সময় লাগছে। বৃষ্টি কমে গেলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জল নেমে যাবে।" এছাড়াও বেশ কিছু এলাকায় পাম্পের সাহায্যে জল বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নিকাশি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে আজ সকালে প্রিন্সেপ ঘাটে যান কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য তারক সিং। সেখানে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এলাকার ছবিও তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন- রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন তিলোত্তমা, সপ্তাহের প্রথম দিনেই ভোগান্তি
আরও পড়ুন- রাতভর বজ্র-বিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি শহরে, আজ সারাদিন কেমন থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের একাধিক রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফলে জল ঠেলেই চলছে যাতায়াত। রাস্তার দু’পাশে থাকা বাড়ির মধ্যেও জল ঢুকে গিয়েছে। জল জমেছে বারুইপুরেও।
বাকি জেলার পাশাপাশি একই ছবি ধরা পড়েছে হুগলিতে। রাত থেকে টানা বৃষ্টির ফলে বেড়েছে গঙ্গার জলস্তর। তার জেরে গঙ্গা তীরবর্তী শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, রিষড়া, কোন্নগর, উত্তরপাড়ার একাধিক রাস্তায় জল জমে গিয়েছে।