সংক্ষিপ্ত

ভোটের দিন থেকেই শুরু হয়েছে ব্যালটের অবমাননা। কোথায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ব্যালট বাক্স। কোথাও আবার ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আর গণনার দিন তো সব কিছু চাড়িয়ে গেল।

 

পঞ্চায়েত ভোটের গণনার দিনে ব্যালট পেরাপের বারোটা বাজল। অধিকাংশ এলাকায় ব্যালট পেরারকে নূন্যতম মর্যাদা দেওয়া হল না। কারণ ব্যালট পেপারের মাধ্যমেই নিজেদের মত প্রকাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম বাংলার মানুষ। ভোটের দিন থেকেই শুরু হয়েছে ব্যালটের অবমাননা। কোথায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ব্যালট বাক্স। কোথাও আবার ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আর গণনার দিন তো সব কিছু চাড়িয়ে গেল। কোথায় ব্যালট ভাসল নর্দমার জলে, কোথাও আবার কালি ঢাকা হল ব্যালটে। প্রতিপক্ষের জয় আটকালে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আর এজেন্টদের নক্কারজন কাজের সাক্ষী থাকল গোটা বাংলা।

ব্যালটের বারোটা বাজলঃ

কোচবিহারঃ

কোচবিহারের ১ নম্বর ব্লকের দক্ষিণ বিধানসভার ৪ বাই ৪৩ নম্বর বুথের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা চলাকালীন আটক করা হয় তৃণমূল প্রার্থী রিঙ্কু রায় রাজভরকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থী তাঁর থেকে ১০০ ভোটে এগিয়ে ছিলেন, সেই সময় তিনি সেখানে পরিস্থিতি অশান্ত করে তোলেন এবং ব্যালট বক্সে তাঁর কোনও সই নেই বলে দাবি জানাতে থাকেন। এই নিয়ে রিঙ্কু রাজভরের সঙ্গে পুলিশ এবং গণনাকারীদের বচসা বাধে। অভিযোগ, আচমকাই রিঙ্কু কালির দোয়াত নিয়ে ব্যালটের মধ্যে ফেলে দেন। এরপরই রিঙ্কুকে আটক করে পুলিশ এবং তাঁকে গণনাকেন্দ্র থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়।

হাওড়াঃ

হাওড়ার বালিতে গণনার দিনে ব্যালট ভাসল নর্দমার জলে। অধিকাংশ ব্যালটেই সিপিএম-এর প্রতীকে ছাপ দেওয়া ছিল বলেও জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। কিন্তু কে বা কারা ব্যালট গণনার আগে নর্দমার জলে ফেলে দিয়েছে তাই নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সিপিএমএর অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তা মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। বালির পল্লীমঙ্গল বিদ্যামন্দিরের বুথে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল। সিপিএমএর অভিযোগ গণনার প্রথমেই তাদের কেন্দ্র থেকে মারধর করে বার করে দিয়েছে। তারপর জানলা দিয়ে ব্যালট ফেলে দিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তবে সেই ব্যালট তৃণমূলের এজেন্ট যখন তুলতে যায় তখনও সিপিএম তার ওপর চড়াও হয়। ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের এজেন্টের। যদিও গোটা ঘটনায় পুলিশ বা নির্বাচন কমিশন উদাসীন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

পঞ্চায়েত নির্বাচন এখনও ব্যালটেই হয়। লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচন কিন্তু হয় ইভিএমএ। বর্তমানে একাধিক রাজনৈতিক দলের দাবি আবারও ব্যালট পেপারেই লোকসভা বা বিধানসভা ভোট ফিরিয়ে আনা। বিরোধীদের অভিযোগ ইভিএমএ কারচুপি করা হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে এই রাজ্যে ব্যালট নিয়ে যে কাণ্ডকারখানা চলছে তাতে বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে ব্যাটল ফিরিয়ে আনার দাবিতে সিলমহর দেওয়া কতটা ঠিক হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে শুরু করেছে। কারণ সাধারণ মানুষ যারা নিজেদের মত প্রকাশ করেছে ব্যালটে তাদের মতামতের দফারফা হতে দেখতে হল তাদের। শুধুযে গণনার দিন এমন হল তা নয়,ভোটের দিনও দেদার ছাপ্পা, ব্যালট বাক্স লুঠের ঘটনা ঘটেছে। পুকুরের জলে পড়ে থাকতে দেখা গেছে ব্যালট পেপার।