সংক্ষিপ্ত

সোমবার মালদহে কালিয়াচক - ৩ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী এলাকায় কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করেছিল কেন্দ্র পূর্ত সড়ক বিভাগ ও বিএসএফ।

 

ভারতে কাঁটাতারের বেড়া দিতে দেবে না বাংলাদেশ! তাই নিয়ে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা BSF ও বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড বা BGB-র মধ্যে সমস্য শুরু হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মালদহ এলাকায়। যদিও বিজিবির দাবি উড়িয়ে বিএসএফ নিজেদের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

সোমবার মালদহে কালিয়াচক - ৩ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী এলাকায় কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করেছিল কেন্দ্র পূর্ত সড়ক বিভাগ ও বিএসএফ। এই এলাকাটি বৈষ্ণবনগর থানার অধীন। অভিযোগ বিএসএফ কাজ শুরু করার পরই কাজে বাধা দিতে ছুটে আসে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিজেপি। বিজিবি-র আধিকারিকদের দাবি এই এলাকা বাংলাদেশের অধীনে পড়ে। তাই বিএসএফ সেখানে কাঁটাতার বসাতে পারবে না। তাই নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বচসা শুরু হয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর দীর্ঘ দিন ধরেই এই এলাকা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে। তাই আতঙ্ক ছিল স্থানীয়দের মধ্যে। এই এলার অন্যপাশে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার শিবগঞ্জ থানা এলাকা। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী সীমান্ত কাঁটাবিহীন উন্মুক্ত স্থানে বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভারত কাঁটাতারের বেড়া বসাতে শুরু করে তা নিয়ে আপত্তি জানায় বিজিবি। যদিও এই বিষয় নিয়ে বিএসএফ ও বিজিবি-র মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন দুই পক্ষের আধিকারিকরাও। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। ভারত বাংলাদেশের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছে সুরক্ষা ও নিপাত্তার জন্য এই এলাকায় কাঁটাতার বসানো প্রয়োজন। দীর্ঘ আলোচনা আর বিতর্কের পর হার মানে বিজিবি। সূত্রের খবর বিজিবির আধিকারিকরা রণেভঙ্গ দিলে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ নতুন করে শুরু হয়। বর্তমানে মালদহের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মালদার জেলা শাসক নিতিন সিংহানিয়া বলেন, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। সমস্যা হয়েছিল। তা সমাধান করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির। নির্যাতন করা হচ্ছে হিন্দুদের ওপর। বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে বেড়েছে পাক-জঙ্গিদের আনাগোনা। সম্প্রতি অসম-সহ এই রাজ্য থেকেও জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ আটকানো একটি চ্যালেঞ্জ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ-এর কাছে। বর্তমানে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। টহল জোরদার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত ঘিরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় বাংলাদেশের সঙ্গে সবথেকে বেশি সীমান্ত ভাগ করে নেয়। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার।

বাংলাদেশের সঙ্গে বর্তমানে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা স্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশে ভারত বিরোধী সুর চড়া হচ্ছে। হিন্দু বিরোধিতা আর ভারত বিরোধিতা প্রায় সমার্থক করে ফেলেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে এই দেশে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। যা মেনে নিতে নারাজ বাংলাদেশ। একাধিকবার শেখ হিসানাকে ফেরতও চেয়েছে। তবে সোজাসুজি নয়। এবার বাংলাদেশের তদন্ত কমিশন হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই দেশে আসতে চায়। কিন্তু তার জন্য এখনও পর্যন্ত ভারতের কাছে কোনও রকম আবেদন বা নিবেদন জানায়নি। মুখে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার কথা বললেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে খুব একটা আগ্রহী নয় তা তাদের কাজেই স্পষ্ট হচ্ছে। এদিনও যার প্রমাণ দিল বিজিবি। অন্যদিকে সম্প্রতি এই রাজ্যের মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশ সরকার আটকে রেখেছিল জলসীমা অতিক্রম করার অভিযোগে। সম্প্রতি তাদের মুক্তিও দিয়েছে মহম্মদ ইউনুস সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশের কারাগারে রেখে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মমতার এই অভিযোগ থেকেও স্পষ্ট বাংলাদেশে ক্রমশই চওড়া হচ্ছে ভারত বিরোধী সুর।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।