সংক্ষিপ্ত

একটা সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে নগদ ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়া নিয়ে তোলপাড় পড়ে গেছিল চারিদিকে। 

একটা সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে নগদ ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়া নিয়ে তোলপাড় পড়ে গেছিল চারিদিকে। তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকার সেই সময় বলেছিলেন, দেখে গা শিরশির করে উঠছিল তাঁর!

কিন্তু এরপর সিবিআই সূত্র জানায়, অনুব্রত কাঁচা টাকা বিশেষ রাখেননি। তা দিয়ে ঘুরপথে নানান সম্পত্তি করেছেন নিজের নামে। সেই সম্পত্তির বহর পার্থর চেয়ে আবার অনেকটাই বেশি। প্রায় ২ বছর জেল খাটার পর, তিহাড় থেকে মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার বীরভূমে ফিরেছেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।

আর সেদিনই অনেকের মনে পড়ে গেছে, বিশাল পরিমাণ আয় বহির্ভূত সম্পত্তির যে অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে, তার কী হল? সিবিআই-এর সূত্র মারফৎ জানা গেছিল, অনুব্রত মণ্ডলের একার নামেই নাকি ২৪টি সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করা রয়েছে। তাঁর মেয়ে তথা সরকারি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা সুকন্যা মণ্ডলের নামে রয়েছে আরও ২৬টি সম্পত্তি। তাঁর স্ত্রী ছবি মণ্ডলের নামে রয়েছে ১২টি সম্পত্তি।

আর অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, যাকে কিনা গরু পাচারকারীরা ‘সাইকেল’ বলে ডাকত, তাঁর নামে নথিভুক্ত রয়েছে ৪৭টি স্থাবর সম্পত্তি।

এখানেই শেষ নয়। অনুব্রত মণ্ডলকে ‘বাবা’ বলে ডাকতেন স্থানীয় বিদ্যুৎবরণ গায়েন নামে এক ব্যক্তি। তিনি আগে বোলপুর পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ির খালাসি ছিলেন। অনুব্রতই নাকি তাঁকে পুরসভায় পাকা চাকরি করে দেন। পরে অনুব্রতর পরিবারের প্রায় সদস্য হয়ে ওঠেন সেই বিদ্যুৎ।

তিনি যে কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তা সুকন্যা মণ্ডলের ফেসবুক পেজের পুরনো ছবি থেকেই স্পষ্ট বোঝা যেতে পারে। সেই বিদ্যুতের নামে ৩২টি প্রপার্টি রয়েছে। বিদ্যুতের স্ত্রীর নামে রয়েছে দু'টি প্রপার্টি। আর অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ কমলকান্তি ঘোষ এবং তাঁর পরিবারের ১৮টি সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে বলে দাবি সিবিআই-এর।

আজ থেকে দুই বছর আগে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার সময়ে সিবিআই-এর এক অফিসার বলেন, নজর করলে দেখা যাবে যে অনুব্রত সাংবাদিকদেরও একটা কথা চিৎকার করে বলছেন। তা হল, যা সম্পত্তি রয়েছে তার জন্য ইনকাম ট্যাক্স দেওয়া আছে।

কিন্তু উনি হয়ত জানেন না যে, কর দেওয়াই শেষ কথা নয়। আয়ের উৎসও দেখাতে হয়। পাশাপাশি সিবিআই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল, এক শ্রেণির চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টের সাহায্যে অনুব্রত বিভিন্ন খাতে আয় দেখিয়ে ওই সব সম্পত্তি করেছেন। বীরভূমের কিছু চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের বাড়িতে হানাও দিয়েছিল সিবিআই। প্রচুর কাগজপত্রও বাজেয়াপ্তও করা হয় সেই সময়।

এদিকে অনুব্রত জামিন পেয়ে বাড়ি ফেরার পর, সেই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী জানান, “অনুব্রত জামিনে মুক্তি পেলেন মানে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা হয়ে যায় না। সিবিআই এবং ইডির তদন্তের সময়, অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গেছে। সেইসব তদন্ত এজেন্সি চার্জশিটেও লিখেছে। আর এই হিসেব বহির্ভূত আয়ের উৎস্য কী? কোথা থেকে এসেছিল বিপুল পরিমাণ এই টাকা? একটা লোক মাছ মাছ বেচতে বেচতে এমনি এমনিই এতগুলো চাল কলের মালিক হয়ে গেল?”

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।