সংক্ষিপ্ত

পুজোর দিনটি যেন রাজকুমারীর বিয়ের দিন। কালীপুজোর দিন সাতসকালে সম্পন্ন‌ হয়ে যায় অধিবাস, নান্নিমুখ। তবুও কেন মা-কে ডাকা হয় ‘মহিষখাগী’ নামে?

প্রায় ৫০০ বছর আগে নদিয়ার শান্তিপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে পঞ্চমুণ্ডের আসনে বসে তন্ত্র সাধনা করছিলেন এক সাধু, হঠাৎ করেই তাঁকে এসে দর্শন দেন মা কালী। দেবীর সেই রূপ দেখে সাধুর মনের অবস্থা একেবারে বদলে যায়। তিনি সেই মুহূর্তে সেই স্থানে কালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই থেকে নদিয়া জেলার শান্তিপুরে পূজিতা হন কালী। কিন্তু, এই দেবীর নাম মহিষখাগী হল কেন?



বহুকাল আগে থেকেই মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য মহিষ বলি দেওয়া হত। সেই নিয়ম অনুসারেই দেবীর নাম হয়েছে মহিষখাগী। কথিত আছে, একবার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই মন্দিরে ৮ টি মহিষ বলি দিতে এসেছিলেন। কিন্তু, একদিনে ৮টি মহিষ পর পর বলি দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। 




প্রত্যেকটি মহিষ বলি দেওয়া সম্পন্ন হতে রাত গড়িয়ে পরের দিন ভোর হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় থেকে মা মহিষখাগীর পুজো দুই পর্যায়ে ভাগ হয়ে যায়। পুজো বলির আগে পর্যন্ত প্রথম অংশ এবং দ্বিতীয় ভাগ বলিদান পরবর্তী সময়ে হত।
 

মা মহিষখাগিরির পুজোর একটি বিশেষ নিয়ম হোল, ঘরের মেয়ের বিয়ের নিয়মেই হয় মায়ের পুজো। দধিমঙ্গলের একদিন আগে নিয়ম শুরু হয়। দধি মঙ্গল উদযাপন কম হলে মাকে ক্ষুধার্ত রাখা হয় এবং উৎসর্গের দিন সকালে তাঁকে পান্তা ভাত ও ক্ষীরা মাছের ভাত নিবেদন করা হয়, তারপর প্রতিমা পূজার সময় লাখ লাখ ভক্ত খালি পায়ে মায়ের মন্দির প্রাঙ্গণে আসেন।

-
আজ কালীপুজোর দিন সাতসকালেই সম্পন্ন‌ হয়ে গেছে দেবীর অধিবাস, নান্নিমুখ। দেবীকে ভাসানে নিয়ে যাওয়ার সময় কোনও গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এখনও পর্যন্ত এলাকার সমস্ত ভক্তরা মিলে মা-কে নিজের কাঁধে চাপিয়ে ভাসানে নিয়ে যান।