সংক্ষিপ্ত

যুদ্ধক্ষেত্র নাকি ভোটগণনা কেন্দ্র, প্রশ্ন তুলছেন তারা। হুগলি জেলার ১৮টি গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ও বাইরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ঠিক সামনে, যুদ্ধক্ষেত্রে মতো তৈরি করা হয়েছে বাঙ্কার।

পঞ্চায়েত ভোটে বিরল ছবি! এবার সত্যি চোখ কপালে উঠছে। কারণ যে ছবি মঙ্গলবার ভোটগণনা কেন্দ্রের বাইরে দেখা গেল, আগে আদৌ দেখা গিয়েছে কিনা তা মনে করতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। হুগলির বেশ কয়েকটি গণনা কেন্দ্রের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দেখা গেল রীতিমত বালির বস্তা দিয়ে বাঙ্কার বানিয়েছেন তারা। তার পিছন থেকে উঁকি মারছে রাইফেলের নল।

এই ছবি দেখে হতবাক মানুষ। যুদ্ধক্ষেত্র নাকি ভোটগণনা কেন্দ্র, প্রশ্ন তুলছেন তারা। হুগলি জেলার ১৮টি গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ও বাইরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ঠিক সামনে, যুদ্ধক্ষেত্রে মতো তৈরি করা হয়েছে বাঙ্কার। ভোটের দিনের মতো যাতে গণনাতেও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য শুরু থেকেই সতর্ক ছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাঁধে দেওয়া হয় নিরাপত্তার ভার। সেই দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে রীতিমত বাঙ্কার বানিয়ে প্রহরা চলল হুগলি জেলার ১৮টি গণনাকেন্দ্রে।

ভোট গোনার কাজ শুরু হয়েছে আজ সকাল ৮টা থেকে। প্রথমে গণনা হচ্ছে ইডি (ইলেকশন ডিউটি) ভোটের। এরপর একে একে গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ব্যালট গণনা হবে।

গোটা রাজ্যে মোট ৩৩৯টি জায়গায় গণনা চলছে। সবচেয়ে বেশি গণনা কেন্দ্র রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। ২৮টি কেন্দ্রে চলছে ভোট গোনার কাজ। গণনা কেন্দ্রগুলিতে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের নিরাপত্তা। রয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার কড়া প্রহরা।

গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের গণনায় রয়েছেন একজন কাউন্টিং অফিসার এবং একজন কাউন্টিং অ্যাসিস্ট্যান্ট। সঙ্গে রয়েছেন প্রত্যেক প্রার্থী ও একজন করে কাউন্টিং এজেন্ট। গণনাকেন্দ্রের বাইরে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার বলয়ে ভোট গোনার কাজ চলছে।

সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টার মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট গণনার কাজ শেষ হবে বলেই ধারণা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। গণনা শেষ হলে কেন্দ্র থেকে সবাই বেরিয়ে গেলে তারপরেই শুরু হবে পঞ্চায়েত সমিতির গণনার কাজ। তারপর একভাবেই জেলা পরিষদের গণনার কাজ শুরু হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছেন, গণনা পুরো শেষ হতে ১২ জুলাই পেরিয়ে যেতে পারে।

এদিকে, শনিবার ভোটের দিন রাজ্য রক্ত প্রাণহানির হোলিখেলা দেখে। এ সময় বহু মানুষ নিহত হয় এবং বুথ দখলের ঘটনাও সামনে আসে। কোথাও কাউকে ব্যালট বাক্স নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, কোথাও ব্যালট বাক্স পুড়ে গেছে আবার কোথাও ব্যালট বাক্স জলে ভাসতে দেখা গেছে। এমন নৈরাজ্যের মধ্যে, পুলিশ, প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের করা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।