সংক্ষিপ্ত

'খোলা হয়েছি লিফট, রাত তিনটের পর বন্ধ রাখা হয়েছিল স্লিপ রুম' ঠিক কী ঘটেছিল তরুণীর সঙ্গে? সিবিআইয়ের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

ঠিক কী হয়েছিল সেই রাত্রে? এই প্রসঙ্গে সিবিআই সূত্র মরফত জানা গিয়েছে, জরুরি বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলে সেমিনার রুম ও পঞ্চম তলে অস্থি শল্য বিভাগ রয়েছে। প্রায় সাড়ে তিনশ জনের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, দুইতলের মধ্যে রাত সাড়ে ১২-র পর একাধিক বার যাতায়াত করেছিলেন নির্যাতিতা চিকিৎসক। সেই রাতে এই চার তলা ও ৬ তলার মধ্যে কর্মরত ছিলেন চার জন রেসপিরেটরি কেয়ার ইউনিট টেকনিশিয়ান। প্রত্যেকেই ছিলেন পুরুষ। এ ছাড়াও ছিলেন ১২ জন ওয়ার্ড মাসি। মহিলা এবং পুরুষ মিলিয়ে নার্সিং স্টাফ ছিলেন সাত জন। এ ছাড়াও মোট ৭ জন ইন্টার্ন বারবার যাতায়াত করছিলেন দুই তলের মধ্যে। এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী জেরায় দাবি করেছেন, "নির্যাতিতাকে রাত ১১টা নাগাদ এক তলার জরুরি বিভাগ থেকে উপরের দিকে যেতে দেখেছেন তিনি।

অন্যদিকে আরও এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয়ও নাকি রাত ১১টার আশেপাশে উপরের তলায় গিয়েছিলেন। ওই সময়ের চতুর্থ তলের সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে সঞ্জয়ের ছবি। তবে সঞ্জয় সেমিনার রুমে কেউ ঢুকতে দেখেছেন এমন কোনও তথ্য প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। সেই রাতের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার লবিতেও দেখা গিয়েছিল সঞ্জয়কে জানা গিয়েছে সূত্র মারফত।

আরও এক নার্সের দাবি অনুযায়ী, সেমিনার রুমে যাওয়ার পথে একটি নার্সিং স্টেশন পড়ে। ঘটনার দিন রাতে ওই নার্সিং স্টেশনে তিন জন নার্স কর্তব্যরত ছিলেন। রাতের ডিউটিতে কাজ থাকে বলে কেউই তেমন বিশ্রাম করেন না। তাই ওই দিনও রাতে সবাই জেগেই ছিল। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে যে ওই রাতে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত কেউই মৃতাকে সেমিনার রুমে ঢুকতে দেখেননি। তবে কি সেমিনার রুমে বসে খাবার খাওয়া ও জ্যাভলিন থ্রু দেখার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যে? এমনই অনুমান করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

এ প্রসঙ্গে অস্থি-শল্য বিভাগের এক নার্স দাবি করেছেন, রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ চতুর্থ তলে দেখা গিয়েছে নির্যাতিতাকে। সেখানে আরও কয়েকজন ছিলেন। এরপরেই ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে তিনি খবর পান। কোনও মতে তাঁকে সেমিনার রুমে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে এমনও খবর পান ওই নার্স। তবে তাঁকে সেমিনার রুমে দেখা গিয়েছে এমন দাবি কেউ করেননি।

শুধু এই নয়, রহস্য তৈরি হয়েছে হাসপাতালের ভিতরে থাকা লিফট নিয়েও। এই লিফট জরুরি বিভাগ থেকে ওপরের তলার মধ্যে দিনের বেলা যাতায়াত করে । এই লিফটে যাতায়াত করেন মূলত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা। চতুর্থ তলে এই লিফ্ট খোলে নার্সিং স্টেশনের মধ্যে। এক নার্সের দাবি সেই রাতে নাকি কোনও এক জরুরি কারণে লিফট চালু করা হয়েছিল। এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীও একই দাবি করেছেন। কিন্তু কেন চালু করা হয়েছিল ওই লিফট? বা কোন রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তার কোনও হদিশ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

তবে কি অস্থি শল্য বিভাগেই কি ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লেন? লিফটে কি তাকেই নামানো হয়েছিল? তারপরে ঠিক কী হল? এইরকমই একাধিক প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মনে।

সেই রাতে হাসপাতালে থকা এক স্নাতকোত্তর চিকিৎসক বক্তব্যে মিলেছে নতুন ইঙ্গিত। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সেমিনার রুমই একমাত্র বিশ্রামের জায়গা নয়, ওই তলে পলিসোমনোগ্রাফি রুমেও বিশ্রাম নিতেন চিকিৎসকেরা। এই ঘরটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। একে স্লিপ রুমও বলা হত। কিন্তু ঘটনার দিন রাত তিনটের পর থেকে তালা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর সেই ঘর খোলা হয়, পাশের একটি ঘর হঠাৎ করেই ভাঙা শুরু হওয়ার পরে, তবে কি এই সমস্ত ঘরে আলাদা কোনও রহস্য রয়েছে ? এমনই পরের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।