সংক্ষিপ্ত

জেল বন্দি আরাবুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে তোলাবাজির অভিযোগ। যদিও কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি নয়, আরাবুলকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ।

 

রাজ্য রাজনীতিতে বরাবরাই তিনি প্রাসঙ্গিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদের হাত তাঁর ওপর ছিল। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের তারা নেতা আরাবুল ইসলান। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল দলের সাংগঠনিক পদ থেকে। একটি নয়, দলের সবকটি সাংগঠনিক পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরাবুল ইসলানকে। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই খবর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আরাবুল ইসলাম একজন সাধারণ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী হিসেবেই পরিচিত। এখন প্রশ্ন তাহলে কি ভাঙড়ের রাজনীতি থেকে তিনি গুরুত্ব হারালেন।

বর্তমানে জেল বন্দি আরাবুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে তোলাবাজির অভিযোগ। যদিও কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি নয়, আরাবুলকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। যার দায়িত্বে রয়েছে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ভোটের সময়ও তাঁর ছাড়া না পাওয়ায় এমনিতেই হতাশ আরাবুল অনুগামীরা। এবার তাঁকে দলের সবকটি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া স্বভাবই প্রশ্ন উঠেছে ভাঙড়ে শেষ হতে চলছে আরাবুলের জমানা।

Ram Navami: রাম নবমীর মিছিল ঘিরে দাঙ্গার আশঙ্কায় কড়া মমতার সরকার, নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ

গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ভাঙড়ে কোনঠাসা আরাবুল ইসলাম। বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড় থেকে জিতেছিলেন আইএসএফ-এর নওশাদ সিদ্দিকী। অন্যদিকে আরাবুলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত তৃণমূলের সওকল মোল্লা জিতেছিলেন ক্যানিং থেকে। তারপরেই ভাঙড়ের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল সওকত মোল্লাকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও অগ্নিগর্ভ হয়েছিল ভাঙড়। মৃত্যু হয়েছিল একজনের। সেখানে নওশাদের অনুগামীদের সঙ্গে আরাবুলের অনুগামীদের সংঘর্ষের খবরও প্রকাশ্যে এসেছিল। যা নিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

অভিষেকের হেলিকপ্টারের পর নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িতে তল্লাশি, বাগযুদ্ধে জড়ালেন বিজেপির প্রার্থী

যাইহোক আরাবুলকে তৃণমূলের সবকটি সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে দলীয় সূত্রে বলা হয়েছে তিনি কলকাতা পুলিশের তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। অন্যদিকে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিল। যা নিয়ে দলের অন্দরে অস্বস্তি বাড়ছে। অন্যদিকে আরাবুলের স্ত্রীও জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে- এটা তাঁরা জানেন। কিন্তু তার বাইরে কোনও মামলা রয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে কলকাতা পুলিশ সেই তথ্য দিচ্ছে না। স্ত্রীর এই অভিযোগে অস্বস্তিতে পড়ছে কলকাতা পুলিশও। সব মিলিয়ে আরাবুল দলের অন্দরে অস্বস্তিতে বাড়াচ্ছেন- এই অভিযোগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে অভিযোগ।

প্রার্থী না হয়েও ভোট ময়দানে নিশীথের প্রতিপক্ষ উদয়ন, কোচবিহারে জোর টক্কর তৃণমূল-বিজেপির

 

২০০৬ সাল, বাম জমানা। সেই সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্ব বামেরা ২৩৫টি আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ও ভাঙড়ে ঘাসফুল ফিটিয়েছিলেন আরাবুল ইসলাম। তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হয়ে বিধানসভায় গিয়েছিলেন। তবে ২০১১ সালে পালাবাদলের ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন আরাবুল ইসলাম। তারপর অবশ্য তাঁকে আর টিকিট দেওয়া হয়নি। সিপিএম-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলেও জড়িয়ে পড়েছিলেন আরাবুল। যার কারণে মাঝে মাঝেই খবরের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল ভাঙড়। কিন্তু এবার সম্ভবত শেষ হতে চলেছে ভাঙড়ের বেতাজ বাদশা আরাবুল ইসলামের জমানা।