সংক্ষিপ্ত

হিংসার ঘটনার তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ১০ এপ্রিল সেই মামলার শুনানিতেই এনআইএ জানিয়েছিল তাঁরা এই ঘটনার তদন্ত করতে প্রস্তুত।

রামনবমীর মিছিল ঘিরে হাওড়া ও হুগলি-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় অশান্তির ঘটনার তদন্তভার এবার এনআইএ-এর হাতে। বৃহস্পতিবার এমনটাই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের রায় অনুসারে আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি এনআইএ-কে হস্তান্তর করতে হবে। উল্লেখ্য রামনমমীর মিছিল ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল হাওড়ার শিবপুর ও হুগলির রিষরা-সহ একাধিক জায়গা। এই হিংসার ঘটনার তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ১০ এপ্রিল সেই মামলার শুনানিতেই এনআইএ জানিয়েছিল তাঁরা এই ঘটনার তদন্ত করতে প্রস্তুত। এবার ২৭ এপ্রিল গোটা ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-কে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।

 

 

কলকাতা হাই কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই মর্মে টুইটারে একটি পোস্টও করেছেন তিনি। টুইট বার্তায় সুকান্ত লিখেছেন,'রাজ্যে রামনবমী ঘিরে অশান্তির ঘটনার তদন্ত করবে এনআইএ। কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই৷ এই দাঙ্গাগুলি পূর্ব পরিকল্পিত এবং তৃণমূল সরকারের সমর্থনে উস্কে দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর জ্বালাময়ী বক্তৃতায় এর সূত্রপাত হয়।' 

 

 

রামনবমীকে কেন্দ্র করে অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছে বাংলায়ও। হাওড়া এবং রিষড়া জুড়ে চলেছে ভয়াবহ অস্থিরতা। সোমবার রাতভর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রিষড়া স্টেশনের কাছে। মঙ্গলবার সকালেও থমথমে হুগলি। ইতিমধ্যেই গোটা এলাকাকে মুড়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার চাঁদরে। সকাল থেকে দফায় দফায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। এলাকায় জারি ১৪৪ ধারা। তবে গতরাতের দুঃস্বপ্ন এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছেন না শহরবাসী। মঙ্গলবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও সকাল থেকে দোকানপাট বিশেষ খুলতে দেখা যায়য়নি। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে সোমবার রাতে অশান্তির জেরে বন্ধ হয়ে যায় হাওড়া বর্ধমান রেল চলাচল। রাত ১টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ফলে বিপাকে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের।

রিষড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হল অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। প্রতিটি রেল গেটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাকা হয়েছে চন্দননগর পুলিশ, হুগলি গ্রামীণ পুলিশের পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশকেও। সকাল থেকেই বন্ধ দোকানপাট। স্থানীয় সূত্রে খবর পুলিশ আপাতত দোকান খুলত্তে বারণ করেছে। গোটা এলাকায় জারি ১৪৪ ধারা। এখানেই শেষ নয়, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রিষড়া জুড়ে। ইতিমধ্যেই অপরাধীদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, রিষড়ায় অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। যদিও আতঙ্কা কাটছে না মানুষের মন থেকে। সোম বার রাতভর বোমাবাজির ঘটনার রেশ মঙ্গলবার সকালেও কাটছে না।