সংক্ষিপ্ত
গণনার আগে থেকেই আত্মবিশ্বাসী হলেও, এই বিপুল মার্জিনে ভোট পেয়ে আল্পুত প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসও।
সাগরদিঘিতে অকাল দোল। ইতিমধ্যেই আবির খেলায় মেতে উঠেছে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। ভোট গণনার শুরু থেকেই হাওয়া বদলের ইঙ্গিত সাগরদিঘিতে। প্রথম দফার গণনা থেকেই এগিয়ে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে ব্যবধানও। তৃণমূলের খাস তালুকেই ফের ঘাটি শক্ত করছে হাত। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ভোটের ৪২ শতাংশই পেয়েছে কংগ্রেস। তবে তৃতীয় রাউন্ডে তৃণমূল বেশ খানিকটা ব্যবধান কমালেও গণনার এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ফের বেড়েছে ব্যবধান। এখনও প্রায় আট দফার গণনা বাকি। মোট ১৬ দফার গণনা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে ফলাফল ঘোষণার আগেই উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে হাত সমর্থকরা। প্রায় প্রতিটি রাউন্ডেই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস।
গণনার আগে থেকেই আত্মবিশ্বাসী হলেও, এই বিপুল মার্জিনে ভোট পেয়ে আল্পুত প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসও। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন,'বণ্যেশ্বরে ৫১৫ ভোটে এগিয়ে। আর মণিগ্রাম অঞ্চলেও এগিয়ে আমরা। যেখানে খারাপ ফল হবে ভেবেছিলাম। সেখানেই যখন এগিয়ে তখন আর চিন্তা কীসের? জিতব জানতাম, কিন্তু মানুষ এতটা ভালোবাসবে ভাবিনি।' উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের গো়ড়ার দিকে এই কেন্দ্র কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি ছিল। ১৯৮৭ সাল থেকে সিপিআই(এম) সাগরদিঘি কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পরিবর্তনের হাওয়া মুর্শিদাবের সাগরদিঘিতেই প্রথম লেগেছিল ২০১১ সালে। সেই সময় থেকেই এটি তৃণমূলের খাসতালুক। নির্বাচন কমিশন অবাধ আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে।
প্রসঙ্গত, গণনা শুরুর আগেই জয়ের ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী হলেও কমতে পারে মার্জিন, জানালেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন,'জয়ী হলেও আমাদের মার্জিন অনেকটাই কমবে। ব্যবধান সর্বোচ্চ হতে পারে ১৫,০০০ মতো। তবে উল্টো সুর শোনা গেল কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের গলায়। তিনি জানিয়েছেন,'এবার তৃণমূলের গড় যে পঞ্চায়েতগুলিতে সেখানে চমকে দেওয়ার মতো ফল হবে। সংখ্যালঘু এলাকায় খুব ভালো ভোট পেয়েছি। জয়ের ব্যবধান কোনও মতেই ২০,০০০-এর কম হবে না। বিধানসভায় খাতা খুলতে চলেছি আমরা। উপনির্বাচনে এবার অধীর এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে এক মঞ্চে দেখা না গেলেও স্থানীয় স্তরে যে এবার বাম-কংগ্রেস বোঝাপড়া এবার অনেক বেশি পোক্ত তা দাবি করেছে দুই শিবিরই। জয়ের জন্য কংগ্রেস প্রার্থীর প্রয়োজন ন্যূনতম ৫০ হাজার ভোট। গত নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩৬ হাজার। বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে এবার সংখ্যাটা ছাড়াতে পারে ৬০ হাজারের গণ্ডি। বিজেপির ভোট শতাংশে খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
২০২১ সালে সালের নির্বাচনে সাগরদিঘি বিধানসভায় ভোট দানের হার ছিল ৭৮.৮৭ শতাংশ। এবছর তা কমে হয়েছে ৭৫.১৮ শতাংশ।বিধানসভা কেন্দ্রের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৮০ হাজারের কাছাকাছি হিন্দু ভোট রয়েছে। এবারের নির্বাচনে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের অনুপস্থিতি ফলাফলের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলবে বলে রাজনৈতিক দলগুলির দাবি।