সংক্ষিপ্ত

ট্রেনে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু । বালেশ্বর থেকে উঠেছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। সেখানেই মামাবাড়ি শেখ আজিমুদ্দিনের । কিছুক্ষণের মধ্যেই দির্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন

 

রুজি-রুটির টানে বাড়ি ছেড়েছিলেন। একটু বেশি পয়সা আয়ের জন্য ভিটেমাটি ছেড়ে চড়ে বসেছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। কিন্তু দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই দূরপাল্লার দ্রুতগামী ট্রেন। তাই আর বাড়ি ফেরা হল না পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের শ্রীরামপুরের বাসিন্দা শেখ আজিমুদ্দিনের। আচমকা তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। শেখ আজিমুদ্দিনের মামাবাড়ি ওড়িশার বালেশ্বরে। দিন কয়েক আগে সেখানেই গিয়েছিলেন। তমলুকের বাড়িতে আর ফেরেননি। মামাবাড়ি বালেশ্বরে হওয়ায় সেখান থেকেই ট্রেনে চড়েন তিনি। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যুর মুখে তলিয়ে যান তরুণ।

বালেশ্বর থেকে যাচ্ছিলেন কেরলা। সেখানে টাইলসের কাজ করতেন শেখ আজিমুদ্দিন। আরও অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের মত তিনিও ছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। কিন্তু বালেশ্বরের কাছেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখে পড়ে দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন। দুর্ঘটনার খবর দ্রুত ছড়েয়ে পড়ে। সন্ধ্যে থেকেই উৎকাণ্ঠা বাড়ছিল পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। রাত ১১টা নাগাদ আসে দুঃসংবাদ- শেখ আজিমুদ্দিন আর নেই। তারপর থেকেই শোকস্তব্ধ গোটা পরিবারের। শুরু হয়েছে শেষ যাত্রার প্রস্তুতি।

ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। রেল সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে। যাইহোক দুর্ঘটনার পর থেকেই গোটা ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পদত্যাগ করুন -এমনটাই দাবি তুলেছে বিরোধীরা। শনিবার সন্ধ্যায় বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে রেল মন্ত্রী জানিয়ে দিলেন 'এখন রাজনীতির সময় নয়, পুনরুদ্ধারের কাজে মননিবেশ করার সময়।' যার অর্থ আপাতত তিনি পদত্যাগ করবেন না।

গতকাল দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা দ্বিগ্বিজয় সিং বলেছেন, যখন রেলমন্ত্রী বারবার বলছেন তাদের সিস্টেম সুরক্ষিত ও কোনও গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটতে পাকে না তখন এটি ঘটল কী ভাবে। পাশাপাশি তিনি লালবাহাদুর শাস্ত্রীর উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন রেল দুর্ঘটনার দায়ভায় মাথায় নিয়ে শাস্ত্রীজি পদত্যাগ করেছিলেন। সেইমত অশ্বিনী বৈষ্ণবেই মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ।

রেল সূত্রের খবর বালেশ্বরের দুর্ঘটনার কারণ জানতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি ও যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের ৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮০ হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮০০র ওপর। আহতের অনেকেরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে কটক হাসপাতালে। এই রাজ্য থেকে দুর্ঘটনার কবলে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার আর চিকিৎসার জন্য প্রায় ৭০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। পাঠান হয়েছে চিকিৎসকের দলও।

আরও পড়ুনঃ

Coromandel Express accident: কুণাল অডিও ক্লিপ টুইট করে বললেন 'সিগনাল ছিল মেনলাইনের, পয়েন্ট ছিল লুপলাইনে'

গোদের ওপর বিষ ফোঁড়া!বালেশ্বর থেকে আহতদের উদ্ধার করে আনার পথে মেদিনীপুরে দুর্ঘটনার কবলে বাস

মৃত্যুপুরী বালাসোর, করমণ্ডল-যশবন্তপুর-মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে যাওয়া কামরায় ঝুলছে মানুষের হাত-পা