সংক্ষিপ্ত
হরপা বানের জেরে স্রোতসিনীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। তারই চিহ্ন ভেসে আসছে তিস্তার ঘোলা জলে।
তিস্তার জনস্রোতে ভেসে আসছে দেহ, জুতো, বাসনপত্র। এমনই ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী থাকল শ জলপাইগুড়ি। হরপা বানের জেরে স্রোতসিনীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। তারই চিহ্ন ভেসে আসছে তিস্তার ঘোলা জলে। বুধবার ঘুম চোখ খুলে সমতলের বাসিন্দারা দেখল নদীর জলে ভাসছে বাসনপত্র, চটিজুতো, আধভর্তি সিলিন্ডার এমনকি মানুষের দেহও। বুধবার ভোররাতে তিস্তার ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছে সিকিম। আচমকা হরপা বানে বিপর্যস্ত পাহাড়। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সেবক থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা। আটকে শয় শয় পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দা।
জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা রেলসেতুর কাছেও অনেকটাই বেড়েছে জল। গতকাল থেকেই ধীর গতিতে ট্রেন চলছে এই সেতুর উপর দিয়ে। ইতিমধ্যেই সমতলে খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। জলপাইগুড়ি কোচবিহার মিলিয়ে বর্তমানে মোট ২৮টি ত্রাণ শিবির তৈরি হয়েছে। তিস্তার দু'পারে উদ্ধার করা হয়েছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে। জলপাইগুড়ির জলডোবায় উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি দেহ। এদের মধ্যে একটি মহিলার। এদিন সন্ধ্যার পর আরও একটি দেহ ভেসে এসেছিল বলে স্থানীয়দের দাবি। সিকিমের দিক থেকেই দেহগুলি ভেসে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।
লাচেন উপত্যকায় তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যা এসে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এখনও পর্যন্ত ২৩ জন সেনা -জওয়ান ভেসে গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। চুংথাং বাঁধ থেকে জল বেরিয়ে আসায় আচমকা জলের স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে গেছে।
জলের তোড়ে সিংটমের কাছে বারডাং-এ পার্ক করা সেনাবাহিনীর গাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৩ জন ভারতীয় জওয়ানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বেশ কিছু যানবাহন প্রবল জলের গ্রাসে চলে গিয়েছে। তড়িঘড়ি তল্লাশি অভিযান শুরু করা হলেও ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেই অভিযান অত্যন্ত প্রতিকূল হয়ে পড়েছে।
পুজোর মুখে ভরা মরশুমে জমজমাট সিকিম। ভর্তি অতিথি নিবাস থেকে সাধারণ হোটেল। বাংলার বাইরে দেশের নানা প্রান্তের মানুষ সিকিমে বেড়াতে আসেন। তবে এবার সৌন্দর্যের ভয়ঙ্কর রূপ দেখল সিকিম। হরপা বানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত সিকিমের একাধিক অংশ। তবে হতাহতের সংখ্যা এখনও জানা জায়নি। এমনকি হিসেব নেই আটকে থাকা পর্যটকেরও৷ ইতিমধ্যেই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বরও। আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল ছুটির ঘোষণা পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি ও মঙ্গনে। স্কুল বন্ধের নির্দেশ শিলিগুড়িতেও।