সংক্ষিপ্ত

৩০ বছর আলো নেই গ্রামে! পোলিং অফিসারদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বিক্ষোভ সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর

ছোট্ট একটা মেয়ে। কিন্তু যার কথার ভাঁজ দেখে তাজ্জব নেটপাড়া। আসানসোলের জামুড়িয়ার আদিবাসী এই মেয়ের মুখ থেকে যেন ফুলঝুড়ি ফুটছে। বিশাখা বাউড়ি নামের এই মেয়ে ভোটের আগের দিন রাতে পোলিং অফিসারদের ঢুকতেই দিল না প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে। কিন্তু কারণ কী?

অভিযোগ গত ৩০ বছর ধরে জামুড়িয়ার তপসী পঞ্চায়েতের যানবাজার এলাকা বিদ্যুৎ শূন্য। হাজার প্রতিশ্রুতি পেলেও আজও আলো আসেনি এই গ্রামে। সূর্য ডুবলে অন্ধকারের মধ্যেই দিন কাটাতে হয় এই এলাকার বাসিন্দাদের। তাই মূলত বিক্ষোভ করতেই পোলিং অফিসারদের বুথে ঢুকতে দেননি এলাকার বাসিন্দারা। অফিসারদের দিকে রীতিমতো আঙুল উঁচিয়ে বিশাখা বলে, "আরে থেকেই দেখো, বোঝো আমরা কেমনে থাকি..."

ভোট এলেই নাকি প্রতিশ্রুতি আসে তবে তারপর আর কোনও হিল্লে হয় না এমনই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাই সরকারি আধিকারিকদের একদিন হলেও এভাবে রাত কাটাতে দেখতে চান তারা। আগে ইসিএলের বিদ্যুৎ ছিল কিন্তু এখন তাও লো ভোল্টেজ। মূলত এর কারণে পড়াশোনাও করতে পারে না গ্রামের বাচ্চারা।

এদিন এই অভিযোগেই সরকারি অফিসারদের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিশাখারা। এ প্রসঙ্গে এক গ্রামবাসী বলেন, "এ আমাদের আজকের সমস্যা নয়। বিদ্যুতের লাইনের জন্যই আমাদের লাইন।"

অন্যদিকে "আমরা কোনও অফিসারের কথা শুনব না। এরকম অন্ধকারে থেকে দেখুক, কেমন লাগে" নিজের অধিকারের লড়াই ও মিথ্যে প্রতিশ্রুতি রুখতে যেন একাই একশো হয়ে দাঁড়িয়েছিল সপ্তম শ্রেণীর বিশাখা। দাবি একটাই “আমরা কেমন ভাবে থাকি একদিন ওরা থেকে বুঝুক” যাতে উপর মহলে কথাটা যায় সেই ইচ্ছে পূরণেই এমন দাবি গ্রামবাসীদের।

তবে মাত্র সপ্তম শ্রেণীতে পড়েও মাথা উঁচু করে নিজের হকের দাবি বুঝে নিতে চেয়েছে এই একরত্তি মেয়ে বিশাখা। প্রত্যন্ত এলাকার এই মেয়ের সাহসের গল্প নাড়া দিয়েছে অনেকের মনেই ।