সংক্ষিপ্ত
ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের সম্পূর্ণ জীবনটাই সেবা ব্রত পালন করে কেটেছে। তাঁর জীবনের প্রথম অধ্যায় শুনলে মনে হবে কি করে সম্ভব! অর্থাভাবে পড়াশুনো চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কলকাতার রাস্তায় ট্যাক্সি চালাতেন ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়!
শুধু একজন সফল ডাক্তার নন তিনি, এ এক বর্ণময় রাজনৈতিক জীবনের গল্প। এ গল্প যেন সিনেমাকেও হার মানায়। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের জীবন যে কোনও মানুষকে হেরে গিয়ে ফিরে আসা শেখায়। শেখায় বাঁচতে, শেখায় অদম্য অটল হয়ে জীবনের প্রতি বিশ্বাস রাখতে।
পাটনার গরিব বাঙালি পরিবারের ছেলেটির জীবনের বর্ণময় ইতিহাসের অনেক খুঁটিনাটি কাহিনী আজও চাপা পড়ে আছে স্মৃতির অন্তরালে। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিনে সেই ছোটখাট গল্প দিয়েই চলুক স্মৃতিচারণা। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের সম্পূর্ণ জীবনটাই সেবা ব্রত পালন করে কেটেছে। তাঁর জীবনের প্রথম অধ্যায় শুনলে মনে হবে কি করে সম্ভব! অর্থাভাবে পড়াশুনো চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কলকাতার রাস্তায় ট্যাক্সি চালাতেন ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়! এমনকী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মেল নার্স হিসাবেও কাজ করেছেন। এত কাজের মধ্যে বই খাতা উল্টে দেখার সময় পেয়ে উঠতেন না।
ভাগ্যের পরিহাস, পরবর্তী জীবনে বিখ্যাত চিকিৎসক কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমবি পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। কিন্তু তবু ভেঙে পড়েননি, বা ডাক্তারি পড়ার বাসনাও ত্যাগ করেননি। ডাক্তার হবেন, মানুষের সেবায় নিয়োজিত করবেন জীবন। অদম্য চেষ্টা তাঁকে ফিরিয়ে দেয়নি। জিতিয়েছে বারবার।
দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে আরও বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে মাত্র ১২০০ টাকা হাতে বিলেত পাড়ি দিয়েছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। বিলেত থেকে মাত্র দুবছরের মধ্যে কলকাতায় ফিরে আসেন এম আর সি পি আর এফ আর সি এস ডিগ্রি নিয়ে।
আর কলকাতা ফিরেই মাত্র ৫ টাকায় ডাক্তারি প্র্যাকটিস শুরু করেন বিধানচন্দ্র রায়। বয়সে যুবক তবুও তাঁর রোগীর তালিকায় তখন ছিলেন দেশের রথী-মহারথীরা। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মৃত্যুশয্যায় চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। কলকাতার খ্যাতনাম এক ডাক্তারের বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত ছিল তাঁর। বয়সের স্বভাবে সেই ডাক্তারের মেয়ের প্রেমে পড়লেন ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়। শোনা যায় মেয়েটির নাম ছিল কল্যাণী। কিন্তু সেখানেও একরাশ হতাশাই প্রাপ্য ছিল তাঁর জন্য। মেয়েটির বাবা তখন কলকাতার মস্ত বড় ডাক্তার। মেয়ের বাবার অনিচ্ছায় মনে মনে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে স্বপ্নের বুননে ছেদ পড়ল। সেদিন ফিরে এসেছিলেন ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়।
পরবর্তীকালে তাঁর নামেই নাকি ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় তৈরি করেছিলেন বর্তমান নদীয়া জেলায় অবস্থিত কল্যাণী শিল্পনগরী। যদিও এই কাহিনী সম্পূর্ণ লোকশ্রুতি। এর সত্যতা নিয়েও দ্বিমত আছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।