সংক্ষিপ্ত
১৫ দিনের মধ্যে ১৩ ডিসেমেল জমি ছাড়তে নোটিশ বিশ্বভারতীর, নাহলে উচ্ছেদের হুমকি অমর্ত্য সেনকে। বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনের নামার হুমকি অধ্যাপকদের।
১৫ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ৬ মে-র মধ্যে অমর্ত্য সেনের 'প্রতিচী' বাড়ির দখলীকৃত ১৩ ডেসিমেল জায়গা খালি করতে হবে। আবারও কড়া নোটিশ জারি করেছে বিশ্বভারতী। বুধবার রাত ১১ টায় সেই নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশে সাফ বলা হয়েছে, জমি খালি না করলে উচ্ছেদ করা হবে। নোটিশে বলা হয়েছে, অমর্ত্য কুমার সেন ও সমস্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উচ্ছেদ করার জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করা হবে। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নির্ধাপিত প্রাঙ্গনের উত্তর-পশ্চিম কোনে ১৩ ডেসিবেল জমি উদ্ধার করা হবে যেকোনও মূল্যে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালটের ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য পিটিআইকে জানিয়েছেন অমর্ত্য সেনের বাড়ির একটি অংশ যদি ভেঙে ফেলার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নেয় তাহলে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক পথে ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানান হবে। তিনি আরও বসেছেন রাজ্যের ব্লক ল্যান্ড রেভিনিউ অফিসারের নথিতে বলা হয়েছে ১৩ ডেসিবেল জমির মালিকও অমর্ত্য সেন। একই আদেশ দিয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি আরও বলেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এমন কিছু করবেন না যাতে সেই আদেশ লঙ্ঘন করা হয়।
এর আগেও নোটিশ জারি করেছিল বিশ্বভারতী। নোটিশ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। অমর্ত্যর 'দখল' করা জমি উদ্ধারে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি সংবলিত সেই নোটিশ 'প্রতিচী' বাড়ির দেওয়ালে সাঁটিয়ে পর্যন্ত দিয়েছে বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ। তার পল্টা আইনি যুক্তি দিয়ে বিশ্বভারতীকে চিঠি দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, 'কোনো আইনেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁকে উচ্ছেদ করতে পারে না।' গত ১৭ এপ্রিল অর্থনীতিবিদ বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচীব তথা বিত্ত আধিকারিককে এই চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে 'প্রতীচী' বাড়ির চত্বরের আইনশৃঙ্খলা ও শান্তিরক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট, তাও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মনে করিয়ে দেন অমর্ত্য সেন। চিঠির মাধ্যমেই অমর্ত্য সেন জানিয়েছেন তিনি জুন মাসে শান্তিনিকেতনে ফিরবেন।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের এ 'প্রতিচী' বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জমি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে তুলেছে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর দাবি, অমর্ত্য সেনের পরিবারের ইজারা পাওয়া ১.৩৮ একর জমির মধ্যে ১৩ ডেসিমেল জমি বেদখল করে রেখেছেন অর্থনীতিবিদ। এই অভিযোগ তুলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৪ টি চিঠি দিয়ে জমি ফেরত চেয়েছে। বিশ্বভারতী অবশ্য তার অবস্থানে অনড় থেকেই সম্পত্তি বিভাগের তরফে নোটিশ জারি করে। তাতে বলা হয়েছে, 'ওই জমি জনগনের সম্পত্তি৷ সেই জমি দখল করে রাখা যায় না৷ অধ্যপক অমর্ত্য সেনকে অনেক সময় দেওয়া হয়েছে৷ তাঁকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷ উনি হাজির হননি বা ওনার প্রতিনিধিও পাঠাননি৷ আগামী ১৯ এপ্রিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই জমি সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷' সেই ১৯ এপ্রিল অর্থ্যাৎ বুধবার রাত ১১ টায় বিশ্বভারতী নোটিশ জারি করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অমর্ত্য সেনের 'দখল' করা জমি খালি না করলে উচ্ছেদ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।