সংক্ষিপ্ত

নিহত ভাদু শেখের ছায়াসঙ্গী ছিল লালন শেখ। বগটুই-কাণ্ডের ৯ মাস পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে। দিন কয়েক মধ্যেই সিপিআই - ক্যাম্প অফিসে মৃত্যু। লালনের মৃত্যু তুলে দিল অনেক প্রশ্ন।

লালন শেখ- বগটুই গণহত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। দীর্ঘ ৯ মাস ফেরার থাকার পর চলতি মাসেই সিবিআই বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের একটি গোপন আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল। পেশ করা হয়েছিল রামপুরহাট থানায়। প্রথম দফায় ৬ দিন দ্বিতীয় দফায় আরও তিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লালন শেখের ঠিকানা ছিল রামপুরহাটের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পে। সোমবার সেখানেই লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। শৌচাগারে উদ্ধার হয় দেহ। সূত্রের খবর লালন শেখের গলায় ছিল গামছার ফাঁস। প্রাথমিক তদন্ত সিবিআই -এর অনুমান আত্মহত্যা। যদিও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী লালন শেখের মৃত্যুর খুন না আত্মহত্যা তা জানার জন্য তদন্তের দাবি করেছেন। অন্যদিকে লালন শেখের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সিবিআই -র অত্যাচারের ফলেই লালন শেখের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে।

লালন শেখ কে?

চলতি বছরের ২১ মার্চ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়তের ধারে বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ভাদু শেখ। এই ভাদুশেখের ছায়াসঙ্গী ছিলেন লালন শেখ। খুনের বদলা নিতে ওই রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তাদের মধ্যে ৯ জন মহিলা। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল লালন শেখ। ঘটনার পর লালন শেখের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন স্থানীয়দের। স্থানীয়দের কথায় তৃণমূল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় থেকে রীতিমত তাণ্ডব চালান লালন শেখ। বগটুই গণগহত্যার ঘটনার পরের দিনও তাকে গ্রামে দেখা যায়। ঘটনার পরদিন রাজ্য সরকার সিট গঠন করে। তারও দুই দুদিন পর হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত হতে নেয় সিবিআই। সেই সময় থেকেই ফেরার হয়ে যায় লালন শেখ। অবশেষে ৫ ডিসেম্বর লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার পর ২১ জুন প্রাথমিক চার্জশিট জমা দেয়। ওই চার্জশিটে লালন শেখকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মূল অপরাধী হিসেবে লেখা হয়। অন্যদিকে ভাদু শেখ খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবেও তার নাম ছিল। কারণ লালন ছিল ভাদুর ছায়াসঙ্গী। ভাদুকে খুনের সময় লালন পাশেই ছিল বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীরা দাবি করেছে।

বগটুইকাণ্ডের প্রমান -

ভাদুশেখ খুন থেকে শুরু করে বগটুই গণহত্যা - একাধিক তথ্য প্রমান ছিল লালন শেখের কাছে। বলা যেতে পারে ২১ মার্চের রাতের ঘটনার চলমান সাক্ষী ছিল সে। বিজেপি -সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই ভয়ঙ্কর সেই ঘটনা। যদিও গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তদন্তে উঠে আসা তথ্য বলছে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল। কিন্তু লালন শেখের মৃত্যু অনেক সত্য অধরা যেতে যেতে পারে। তেমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

আরও পড়ুনঃ

সিবিআই-এর অত্যাচারেই লালন শেখের মৃত্যু - অভিযোগ পরিবারের, বীরভূম পুলিশ বলল তদন্ত হবে

সিবিআই ক্যাম্প অফিসে রহস্যজনক মৃত্যু বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের

দিন পিছিয়ে দিলেন শুভেন্দু , বললেন 'প্রভাবশালী ডাকাত গ্রেফতার হবে ১৪ জানুয়ারী '