সংক্ষিপ্ত
ডিসেম্বরের শুরু থেকে খুলে গেল অযোধ্যা পাহাড় তথা রাজ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা বামনী ফলস। এদিকে বামনি ফলস চালু হতেই বাজার বসানো নিয়ে স্থানীয় আদিবাসী এবং দোকানিদের মধ্য শুরু হয়েছে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, যার জেরে বেশ চাপে স্থানীয় প্রশাসন সহ বন দফতর।
শীত (Winter) পড়তেই পর্যটকদের ঢল অযোধ্যা পাহাড়ে। ডিসেম্বরের শুরু থেকে খুলে গেল অযোধ্যা পাহাড় (Ajodhya Hills) তথা রাজ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা বামনী ফলস। বামনি ফলস (Bamni Falls) চালু হতেই বাজার বসানো নিয়ে স্থানীয় আদিবাসী এবং দোকানিদের মধ্য শুরু হয়েছে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব । যার জেরে বেশ চাপে স্থানীয় প্রশাসন সহ বন দফতর (West Bengal Forest Department)।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল অযোধ্যা পাহাড়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ টুরিস্ট স্পট বামনি ফলস।বামনি ফলসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুরুলিয়া জেলা বনাধিকারীক দেবাশীষ শর্মা। জেলা বনাধিকারিক জানান, 'সৌন্দর্যায়নের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বামনি ফলসের উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে পর্যটকরা আনন্দ পাবেন। পর্যটককে কথা মাথায় রেখে করা হয়েছে শৌচাগার। এছাড়াও পরবর্তী সময়ে আরও উন্নত করা হবে অযোধ্যা পাহাড় ও বামনি ফলসকে। যাতে স্থানীয় সমস্যা না থাকে তাই সকলের সঙ্গে কথা বলেই সমস্যা মেটানো হবে।' এদিকে উদ্বোধনের পর থেকেই এলাকায় কারা দোকান বাজার বসাবে সে নিয়ে পাহাড়ের আদি বাসিন্দা এবং বাড়েরিয়া, পাথরডি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বামনি ফলসের পাড়ে দোকান খোলা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে কাজিয়া। এলাকায় কারা আদি বাসিন্দা, কারা দোকান বাজার বসাবে সেই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ায় বেশ চাপে স্থানীয় প্রশাসন সহ বন দফতর। বামনী ফলস চালু হলে দোকানদারদের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলের আশঙ্কায় কড়া পুলিশী মোড়কে উদ্বোধন করা হয় বামনি ফলসের।
বিষয়টি নিয়ে অযোধ্যা পাহাড়ের বামনী ফলস এলাকার গ্রামের গ্রাম সভার সদস্য জ্যোতির্ময় হাঁসদা ও নমিতা হাঁসদারা জানান, ২০০৬ সালের জল জঙ্গল ভূমি আইন অনুযায়ী আমাদের জঙ্গলে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে হবে।যদিও বিষয়টি নিয়ে বাড়েরিয়া ও পাথরডি সুরক্ষা কমিটির সম্পাদক অজয় কুমার জানান, বামনি ফলস আমাদের এলাকার মধ্যে।এখানে দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামের মানুষ ব্যাবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।তাই আমাদের দাবি যে সকল ব্যাক্তি এই বামনি ফলসে দোকান করে আসছিল তাদের পুনরায় দোকান খোলার অনুমতি দিতে হবে।দাবি না মানা হলে উভয় পক্ষই আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।পরে উভয় গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে আলোচনার পর উদ্বোধনের কাজ সম্পন্ন হয়। উদ্বোধন ঘিরে কড়া পুলিশী নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় এলাকা।উপস্থিত ছিলেন ঝালদা মহকুমা শাসক রিতম ঝা,মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুব্রত দেব, বাগমুন্ডি ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবরাজ ঘোষ অযোধ্যা পাহাড়ের বনদপ্তর আধিকারিক মনোজকুমার মল্ল সহ অন্যান্যরা।
শীত পড়তেই নভেম্বর মাস থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান অযোধ্যা পাহাড়ে। পাহাড়ে অন্যান্য টুরিস্ট স্পট থেকে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বামনী ফলস। কিন্তু একদিকে করোনা এবং অন্যদিকে সৌন্দর্যায়নের কারণে বামনী ফলস দীর্ঘ দু বছর বন্ধ রাখা হয়।ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বামনি ফলস খুলে যাওয়ায় এবার অযোধ্যা পাহাড় ভ্রমণের বাড়তি আনন্দ নিতে পারবেন দূরদূরান্তের পর্যটকরা।