সংক্ষিপ্ত
রাজ্যের আইনসভায় অধিবেশনের ডাক এবং স্থগিত করার ক্ষমতা রাজ্যপালের রয়েছে। তাছাড়াও তিনি চাইলে, রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে দিতে পারে।
গত কয়েক মাস ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। এদিকে এরইমাঝে রাজ্য চলছে পৌরসভা নির্বাচনা। পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে শনিবারই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি সহ ৪ পুরনিগমে। এদিকে তারমাঝেই এবার রাজ্যপালের নতুন ঘোষণা ঘিরে চরমে উঠেছে রাজনৈতিক চর্চা। আজ থেকেই রাজ্য বিধানসভার (West Bengal Legislative Assembly) অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Governor Jagdeep Dhankhar)।
টুইটারে কী লেখেন রাজ্যপাল
এদিন তিনি টুইট করে লেখেন, ‘সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারার উপধারা ২-এর অধীনে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্থগিত থাকছে অধিবেশন।’ এদিকে বাংলার বুকে এই ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, সংবিধানের ছুতো দিয়ে আদপে সংবিধানেরই অবমাননা করছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের আইনসভায় অধিবেশনের ডাক এবং স্থগিত করার ক্ষমতা রাজ্যপালের রয়েছে। তাছাড়াও তিনি চাইলে, রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন।
কী বলছে সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারা
সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারা বলে রাজ্য পাল চাইলে রাজ্য আইনসভার প্রতিটা হাউসকেই সমন পাঠাতে পারেন। চাইলে দেখা করার জন্য ডাকও দিতে পারেন। তবে একবার বৈঠক হলে সেই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত কমপক্ষে ৬ মাস কার্যকরী থাকে। এই সময়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়বার আর হস্তক্ষেপ করতে পারেননা। সহজ কথায় একবার সমন পাঠানোর পর ৬ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সমন পাঠানোর এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালের। পরের অধিবেশনেই ঠিক হবে বাকি সিদ্ধান্ত। তবে রাজ্যপাল বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন যদি মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়। এমনকী এই জাতীয় ‘ডেড লক’ পরিস্থিতি তৈরি হলে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রীও চাইলে রাজ্যপালের কাছে দরবার করতে পারেন।
ঠিক কোন কোন ক্ষমতা রয়েছে রাজ্যপালের হাতে
তবে খাতায় কলবে রাজ্যপালের হাতে এই ক্ষমতাগুলি থাকলেও তা সিংহভাগ ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক ভাবেই থেকে থাকে। এই ক্ষমতাগুলির ব্যবহারিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালেরা সাধারণত কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ মেনেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এদিকে ভারতীয় সংবিধানের ১৫৫ নং ধারা বলে ভারতের রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন। সংবিধানের ১৫৪ (১) নং ধারা বলেই অনুযায়ী রাজ্যের শাসন-সংক্রান্ত সমস্ত ক্ষমতা তত্ত্বগতভারে রাজ্যপালের হাতে রয়েছে। এমনকী রাজ্যের শাসন-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম ও যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্যপালের রয়েছে। বর্তমানে এই ক্ষমতাই নিজ হস্তে বাংলার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করছেন জগদীপ ধনকড়।