বিজেপি-র উপরে চাপ আরও বাড়িয়ে এবার এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করলেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। আর এই সাক্ষাতের পরেই শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস মিলে মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গঠনের জল্পনা আরও উস্কে গিয়েছে। এই সাক্ষাৎকে শরদ পাওয়ার সৌজন্যমূলক বলে দাবি করলেও সঞ্জয় রাউত জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে। ফলে, মহারাষ্ট্রের মসনদে শেষ পর্যন্ত সত্যিই দেবেন্দ্র ফড়নবীশই বসবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ক্রমশ বাড়ছে।
শিবসেনার দাবি মতো তাদেরকে আড়়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে রাজি নয় বিজেপি। এর পাশাপাশি মন্ত্রিসভাতেও পঞ্চাশ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব দাবি করেছেন উদ্ধব ঠাকরেরা। স্বরাষ্ট্র, অর্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরও দাবি করেছে তাঁরা। কিন্তু এই দাবিকে আমল দিতে নারাজ বিজেপি। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। এখনও সরকারিভাবে কোনও আলোচনা না হলেও, বিজেপি প্যাঁচে ফেলতে শিবসেনা কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারে বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য এখনও কোনও দলই সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি দেয়নি।
২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন চাই। বিজেপি-র জিতেছে ১০৫টি আসনে। শিবসেনা সেখানে জিতেছে ৫৬টি আসনে। কংগ্রেস এবং এনসিপি যথাক্রমে ৪৪ এবং ৫৪ টি আসনে জিতেছে। এই অবস্থায় বিজেপি-র সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস ও এনসিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে শিবসেনার পক্ষে সরকার গঠন সম্ভব। এই সম্ভাবনা যে একেবারে অমূলক নয়, তা প্রমাণ করে সঞ্জয় রাউত বলে দিয়েছেন, 'শিবসেনা যদি মনে করে তাহলে স্থায়ী সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করে ফেলবে। মহারাষ্ট্রের মানুষ পঞ্চাশ- পঞ্চাশ ফর্মুলার কথা জেনেই ভোট দিয়েছেন। তাঁরা শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে চান।'
এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে মোট নির্দল এবং ছোট দল মিলিয়ে মোট ২৯জন প্রার্থী জিতেছেন। এঁদের অধিকাংশ বিজেপি এবং শিবসেনার বিক্ষুব্ধ নেতা। ফলে দু' দলই এখন তাঁদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, ১৫ জন নির্দল বিধায়কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু এই নির্দলদের সমর্থন পেলেও ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারবে না বিজেপি।
গত ২৪ তারিখ ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই বিজেপ এবং শিবসেনার মধ্যে জটিলতা বেড়েছে। উদ্বব ঠাকরেদের স্পষ্ট দাবি, প্রাক নির্বাচনী যে প্রতিশ্রুতি বিজেপি তাদের দিয়েছিল, তা মেনে নিয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ লিখিত প্রতিশ্রুতি না দিলে সরকার গঠনে সমর্থন জানাবে না তারা। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্র জট কীভাবে কাটে, সেদিকেই এখন নজর গোটা দেশের।