তারাপীঠে মা তারা অধিষ্ঠাত্রি দেবী। সব দেবীর উর্দ্ধে মা তারা। তাই তারাপীঠে কোন দেবী মূর্তি পুজোর চল নেই। মা তারাকে সামনে রেখেই সমস্ত দেবী মূর্তির পুজো করা হয় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে। দীপান্বিতা কালী পুজোর তিথিতে তাই মা তারাকেও শ্যামা রূপে পুজো করা হয় ।
পুরাণ অনুসারে মা কালীর প্রথম আবির্ভাব হয় ভগবান শিব হতে। তিনি শক্তির চূড়ান্ত প্রকাশ এবং সমস্ত জীবের জননী। নির্দোষকে রক্ষা করার জন্য তিনি মন্দকে ধ্বংস করেন। সময়ের সাথে সাথে, কালীকে ভক্তিমূলক আন্দোলন ও তান্ত্রিক সম্প্রদায়ের দ্বারা বিভিন্নভাবে দেবী মা, মহাবিশ্বের মা, আদিশক্তি বা পার্বতী হিসাবে পূজা করা হয়। শাক্ত ও তান্ত্রিক সম্প্রদায়রাও তাঁকে চূড়ান্ত বাস্তবতা বা ব্রহ্ম হিসেবে পূজা করে।তাঁকে ঐশ্বরিক রক্ষক হিসেবেও দেখা হয় এবং যিনি মোক্ষ বা মুক্তি প্রদান করেন।
আজ কালী পুজো। তারাপীঠে এদিন মা তারাকে কালী রূপে পুজো করা হয়। তারাপীঠে মা তারা অধিষ্ঠাত্রি দেবী। সব দেবীর উর্দ্ধে মা তারা। তাই তারাপীঠে কোন দেবী মূর্তি পুজোর চল নেই। মা তারাকে সামনে রেখেই সমস্ত দেবী মূর্তির পুজো করা হয় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে। দীপান্বিতা কালী পুজোর তিথিতে তাই মা তারাকেও শ্যামা রূপে পুজো করা হয় । এদিন মায়ের নিত্য পূজার্চনার পাশাপাশি শ্যামা রূপে মা তারাকে বিশেষ পুজো করা হবে ।
আর পাঁচটা দিনের মতো মা তারাকে এদিন ভোরবেলা স্নান করানো হয়। এরপরেই মা তারাকে অষ্টধাতুর মুখাভরন, মুণ্ডমালা, মুকুট, সোনার অলঙ্কার, ডাকের সাজ ও ফুল মালা দিয়ে শ্যামা রূপে সাজানো হয়। এরপর শুরু হয় মঙ্গলারতি। মা তারার প্রথম পুজোর সঙ্গে দেওয়া হয় শীতল ভোগ। আর পাঁচটা দিনের মতো এদিনও মায়ের নিত্যভোগ হয়। আজ নিশিরাতে মা তারাকে সোনার অলঙ্কারে ও ডাকের সাজে রাজ রাজেশ্বরী বেসে সাজিয়ে মা তারাকে শ্যামা রূপে পুজো শুরু করা হয়। আজ সারারাত মন্দির খুলে রাখা হয় ।
আরও পড়ুন- নগ্নরূপেই কেন মা কালী পূজিত হন, জেনে নিন এর আসল কারণ
আরও পড়ুন- দীপাবলিতে বাড়িতে এই জায়গায় রাখুন সৌভাগ্যের মূর্তি, দুর্ভাগ্য দূর হয়ে হবে টাকার বৃষ্টি
আরও পড়ুন- মহাভারত যুদ্ধের আগে কার্তিক মাস এমনই ২টি গ্রহণের যোগের সৃষ্টি হয়েছিল, দুর্ঘটনার আশঙ্কা
সতীর দেহ একান্নটি খণ্ডে ছিন্ন হয়ে পৃথিবীর নানা স্থানে পতিত হয়। এইসকল স্থান "শক্তিপীঠ" নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। পশ্চিমবঙ্গেও এই রকম একাধিক শক্তিপীঠ অবস্থিত। এগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পীঠ হল কালীঘাট ও তারাপীঠ। সতীর তৃতীয় নয়ন বা নয়নতারা তারাপুর বা তারাপীঠ গ্রামে পড়ে এবং প্রস্তরীভূত হয়ে যায়। ঋষি বশিষ্ঠ প্রথম এই রূপটি দেখতে পান এবং সতীকে তারা রূপে পূজা করেন। তারাপীঠ এখানকার "পাগলা সন্ন্যাসী" বামাক্ষ্যাপার জন্যও প্রসিদ্ধ। বামাক্ষেপা এই মন্দিরে পূজা করতেন এবং মন্দির-সংলগ্ন শ্মশানক্ষেত্রে কৈলাসপতি বাবা নামে এক তান্ত্রিকের কাছে তন্ত্রসাধনা করতেন। বামাক্ষ্যাপা তারা দেবীর পূজাতেই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মন্দিরের অদূরেই আটলা গ্রামে তাঁর আশ্রম অবস্থিত।