কিংবদন্তী শিল্পী বিরজু মহারাজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত শিল্পী মহল।
ফের ইন্দ্রপতন, প্রয়াত কত্থক গুরু বিরজু মহারাজ (Birju Maharaj)। রবিবার রাতে দিল্লির বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। পরিবার সূত্রে খবর গতকাল রাতে নাতির সঙ্গে খেলছিলেন তিনি, তখনই হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত শিল্পী মহল।
মহারাজ জি-র স্মৃতিচারনায় শ্রদ্ধার্ঘ্যে কে কি জানালেন-
তন্ময় বসু ( তবলা বাদক) (Tanmay Bose) -' শিল্পীদের তো মৃত্যু হয় না। তাঁরা অমরত্ব লাভ করেন তাঁদের শিল্প দিয়েই। উনি তো শুধু নৃত্য শিল্পী ছিলেন না, একাধারে তবলা , হারমোনিয়াম, সেতার কি না জানতেন। উনি তো বাগদেবীর বর পুত্র ছিলেন। তাই রাজার মত চলে গেলেন। ওনারাই তো লেগেসি বহন করেছেন। নতুনদের সঙ্গে পুরাতন দের যোগসূত্র ঘটিয়েছেন। এই ক্ষতির কোনও পূরণ হবে না।'
'আমার সাথে বহুবার সাক্ষাৎ হয়েছে। কলকাতায় বাইরে। আমার অনুষ্ঠান ও দেখেছেন দর্শক আসনে বসে। এইটা আমার পরম পাওয়া। মনে পড়ছে নানা স্মৃতি। কিন্ত মানুষ তো অমর নন । তাই এই নির্মম সত্য মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কি?'
অলকানন্দা রায় (নৃত্যশিল্পী) (Alakananda Roy) : 'সকালটাই শুরু হল দুঃসংবাদ দিয়ে। খবর টা পাওয়া মাত্র স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম কিছুক্ষনের জন্য। মনে হচ্ছিল একটা বট বৃক্ষ সরে গেলে। এই সব মানুষ তো যত দিন থাকেন ছায়া দেন তাই তাঁদের চলে যাওয়া টা বড্ডো রিক্ত করে। জীবনের শেষ পর্যন্ত উনি তো কাজের মধ্যেই ছিলেন। ব্যাক্তি গতভাবেও চিনতাম। দেখা হয়েছে বহুবার। শিল্প ভাবনার বাইরে উনি বাচঁতেন না কখনও। আমার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল বঙ্গ সম্মেলনে। তারপর তো উনি কলকাতায় আসা কমিয়ে দেন। বার্ধক্যে কারণে নানা সময় অসুস্থতার কথা শুনেছি। কিন্তু তবু উনি একটিভ ছিলেন। সত্যি এটা ইন্দ্রপতন।'
আরও পড়ুন- 'আমার শেষ ইচ্ছাটুকুও আমার পিতাকে অনুসরণ করেই'- যাওয়ার আগেও শেষ ইচ্ছেতে রেখে গেলে
আরও পড়ুন- Pandit Birju Maharaj: কথক সম্রাট বিরজু মহারাজ শুধু নাচ নন, বলিউডকেও দিয়েছেন তাঁর
ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার (সরোদ বাদক) (Indrayuddh Majumdar)- '২০২২ এর শুরুতেই পরপর হারানোর খবর। এই শূন্য স্থান পূরণ হওয়ার নয়। গত পরশু ওনার নাতনির সঙ্গে কথা হল। তখনই জানতে পারলাম উনি এখনও নিজে বসে সেখান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজের মধ্যে ছিলেন। আমার সাথে ব্যক্তিগত ভাবে আলাপ ছিল। উনি দারুন মজার মানুষ ছিলেন। কলকাতায় ও ২ বার আমাদের অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন। একবার তো নিজে পারফর্ম ও করেন। অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর , আমার গায়ে পড়ে থাকা জোহর কোর্ট টা খুলে নিচ্ছিলেন। আমার ঠান্ডা লাগছিল দেখে বললেন পরে ওটা আমায় পাঠিয়ে দিতে বলেছিলেন। কোনও ভালো অনুষ্ঠানের কথা শুনলে হাতে সময় থাকলে চলে আসতেন।'