আহির পিলু রঞ্জা- মল্লারের মতই একেবারে ভিন্ন স্বাদের জুটি রঙ্গন-মল্লিকাও। শুরু থেকে তাদের মধ্যে রসায়ন দেখা গেছিল এমনটা নয়। পরিস্থিতির চাপে পড়েই চার হাত এক হয় তাদের। তবে তারপর থেকেই নিজেদের সম্পর্ককে একেবারেই অন্যভাবে সামলাতে দেখা যায় এই দুই চরিত্রকে। এক কথায় বলা যেতে পারে ধারাবাহিকের বাকি চরিত্রগুলি থেকে রঙ্গন মল্লিকার সম্পর্কের রসায়নটা অনেক বেশি পরিণত। গতানুগতিক দাবি দাওয়া নয় বরং একে অন্যের পরিপূরক হয়ে এই জুটিকে সার্থক করে তুলছেন তারা। পর্দায় ও যেমন এই জুটি অতি জনপ্রিয়, বাস্তবের রসায়ন ঠিক কেমন তাদের?
আহির পিলু রঞ্জা- মল্লারের মতই একেবারে ভিন্ন স্বাদের জুটি রঙ্গন-মল্লিকাও। শুরু থেকে তাদের মধ্যে রসায়ন দেখা গেছিল এমনটা নয়। পরিস্থিতির চাপে পড়েই চার হাত এক হয় তাদের। তবে তারপর থেকেই নিজেদের সম্পর্ককে একেবারেই অন্যভাবে সামলাতে দেখা যায় এই দুই চরিত্রকে। এক কথায় বলা যেতে পারে ধারাবাহিকের বাকি চরিত্রগুলি থেকে রঙ্গন মল্লিকার সম্পর্কের রসায়নটা অনেক বেশি পরিণত। গতানুগতিক দাবি দাওয়া নয় বরং একে অন্যের পরিপূরক হয়ে এই জুটিকে সার্থক করে তুলছেন তারা। পর্দায় ও যেমন এই জুটি অতি জনপ্রিয়, বাস্তবের রসায়ন ঠিক কেমন তাদের? তা জানতেই এশিয়ান নেট নিউজ বাংলা পৌঁছালো পিলুর সেটে। সেখানেই রঙ্গন মল্লিকা কে পাওয়া গেল দারুণ মেজাজে। এশিয়া নেটের সঙ্গে আড্ডায় কি জানালেন তারা চলুন দেখে নেওয়া যাক।
প্রশ্নকর্তা: ধারাবাহিকের এখন যা ট্র্যাক সেখানে রঙ্গন এখন বিবাহিত, এবং যেভাবে বিয়েটা হয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল আরও অনেক কিছু নাটকীয়ভাবে দেখানো হবে। কিন্তু সমস্ত পরিস্থিতিটা রঙ্গন খুব পরিণত ভাবে রঙ্গন মানিয়ে নিয়েছে। সেই ফ্যাক্টটা নিয়ে কিছু বলো।
রুদ্র: প্রথমত রঙ্গনের যে চরিত্রটা ছিল আমাদের দর্শকরা দেখেছে প্রথম থেকেই একটা ছটফটে চরিত্র। সে প্রচন্ড হইহুল্লোড়, পার্টি, নাচগান করতে পছন্দ করতো। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে যেটা হয় মানুষ যখন পরিস্থিতির চাপে পড়ে সে পরিবর্তিত হতে থাকে। তো রঙ্গনের ক্ষেত্রেও সেরকমই হয়েছে। রঙ্গন সুরমণ্ডলের এমন একজন সদস্য ছিল যে নাচ গান করতে খুব পছন্দ করত কিন্তু পরিস্থিতি যেরকম হয় তাতে রঙ্গনের পরিবারের থেকে সুরমণ্ডল হাতছাড়া হয়ে যায়। বসু মৌলিক পরিবার তা নিয়ে নেয়। সেইসময় সুরমণ্ডলের কোনো সদস্যই বুঝতে পারছিলো না যে এরপর তারা কী করবে। সেই মুহূর্তে দাড়িয়ে রঙ্গন ও বুঝতে পারছিল না কী করা উচিত। যার জন্য তাকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। তার প্রেম ত্যাগ করতে হয়, তার নাচ গান ত্যাগ করতে হয় এবং তার মধ্যে যে ছেলেমানুষী ছিল সেটাও ত্যাগ করতে হয়। সবটাই পরিস্থিতির চাপে পড়ে।
( সেটে মিমি প্রবেশ করে)
প্রশ্নকর্তা: তোমাদের চরিত্র দর্শক এতো পছন্দ করছে। তো তোমাদের চরিত্রের অর্থাৎ রঙ্গন মল্লিকার রসায়ন নিয়ে কিছু বলো।
রুদ্র: রঙ্গন এখন অনেকটাই পরিণত হয়ে গিয়েছে। দায়িত্ববান হয়ে গিয়েছে। তার কারণ তাকে জীবন এমন পরিস্থিতিতে এনে দিয়েছে যে তাকে বিয়ে করতে হয়েছে, বিয়ে করার পর তার একটা দায়িত্ব এসেছে । রঙ্গন চেষ্টা করছে কোথাও গিয়ে যাতে তাদের বাড়িটাও ফিরে পায় এবং তার সঙ্গে সঙ্গে….
মিমি: ….সম্পর্কটাও ঠিক হয়।
প্রশ্নকর্তা: তোমাদের চরিত্রের সম্পর্কের থেকেও বেশিটা জুড়ে দেখানো হচ্ছে বন্ধুত্ব। সেটা নিয়ে কিছু বলো।
মিমি: দুটো চরিত্রের জার্নি খুব অদ্ভুত যেখানে একে অপরকে কেউই চেনে না এবং সেখান থেকে হঠাৎ করে বিয়ে করতে হয় এবং ( রুদ্র নিজের মাইকটি খুলে মিমির মুখের কাছে ধরে, মিমি হেসে ধন্যবাদ জানায়) সেই দুটো মানুষ যখন একসাথে হয় এবং তাদের মধ্যে ভালোবাসাটা যতটা না তার থেকে বেশি তারা একে অপরের বন্ধু। তারা একে অপরের পাশে দাড়াচ্ছে। নিজেরা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে যে সেটাই ভালোবাসা কিনা। একে অপরকে সাহায্য করার এই বিষয়গুলো খুব সুন্দর এবং খুব ইন্টারেস্টিং লাগছে। আর চরিত্রটা করতেও খুব ভালো লাগছে।
রুদ্র: হ্যাঁ মানে সব থেকে যেটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার কিছুদিন আগে আমাদের একটা টেলিকাস্ট গিয়েছে। প্রথম থেকেই রঙ্গনের একটা ডায়ালগ ছিল যে যেদিন সে ভালো গান করবে সেদিন সেলফি তোলার জন্য লাইন লাগবে। ঘটনাচক্রে রঙ্গন তার প্রথম সেলফি তোলে তার স্ত্রী মল্লিকার সঙ্গে।
মিমি: হ্যাঁ এটা নিয়ে একটা খুব সুন্দর সিন হয়েছে যেখানে আমি ওকে বলছি যে আপনার ফোনটা একটু বের করুন তো। আপনি প্রথম সেলফি টা আগে আমার সাথেই তুলুন। এরপরে যদি সত্যিই খুব ভীড় হয়ে যায় আর আমি আপনার সঙ্গে সেলফি না তুলতে পারি। তো খুব সুন্দর একটা সিন। সুন্দর একটা ডেভলপমেন্ট। খুব টাচি। আমাদের সিন গুলো একটু অন্যরকম হয়। আমাদের গল্পটা একটু অন্যরকম। এখানে যে তিনটে দম্পতি রয়েছে । তিন দম্পতির সম্পর্কের সমীকরণই আলাদা আলাদা। একদম গতানুগতিক প্রেমের গল্পের মত নয়। কিন্তু কিভাবে প্রেম হচ্ছে কিভাবে কি হচ্ছে সেই জার্নিটা খুব ইন্টারেস্টিং।
রুদ্র: আর একচুয়ালি সবথেকে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে রঙ্গন মল্লিকার যে রসায়ন বা এই মুহূর্তে যেভাবে তাদের সম্পর্কটাকে দেখানো হচ্ছে সেটার খুব স্ট্রং পয়েন্ট হচ্ছে আমাদের জীবনে কোথাও গিয়ে একজন বন্ধু দরকার হয় । সাপোর্ট টা খুব দরকার। অনেক ছেলে আছে যারা বেকার যারা কাজ কর্ম ঠিকভাবে করছে না কিন্তু তার যদি সাপোর্ট পায় সে কোথাও হতে পারে মায়ের দিক থেকে বাবার দিক থেকে বা বোনের দিক থেকে বা স্ত্রীয়ের দিক থেকে । সেটা পেলে কোথাও গিয়ে সেই মানুষটার মধ্যে অদ্ভুত একটা পরিবর্তন আসে। তার মনে হয় এবার আমায় কিছু একটা করতে হবে। আমার স্ত্রীয়ের জন্য বা আমার পরিবারের জন্য করতে হবে। তো আমাদের যে সিন গুলো হচ্ছে সেখানে এই বন্ডিং টা খুব ভালোভাবে দেখানো হচ্ছে। মল্লিকা খুব বেশি করে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে রঙ্গনকে। যে আপনি পারবেন।
আরও পড়ুনঃ
পিলুর সেটে রঞ্জার জন্মদিন পালনের কিছু বিশেষ মুহূর্তের ছবি দেখে নিন
ভক্তের সঙ্গে সেলফি তুলতে উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফ বিদ্যুৎ জামওয়ালের, ভিডিও দেখে থ নেটদুনিয়া!
প্রশ্নকর্তা: তো এটা তো গেলো পর্দার ওপারের কথা তো পর্দার এপার টায় তোমাদের রসায়ন নিয়ে কিছু বলো। এমন যে একটা জুটি হতে পারে এটা আগে কারো মাথাতেই আসেনি। অফস্ক্রিনে তোমাদের রসায়ন টা কিরকম।
মিমি: এখানে সবাই খুব ভালো। মানে পুরো কাস্ট অ্যান্ড ক্রু খুব ভালো। আর আমাদের যে পুরো টেকনিশিয়ান টিম তাদের সাথে যদিও আমার অনেক আগে থেকে কাজ এবং কলা কুশলীদের অনেকের সঙ্গেই আগে কাজ করেছি। রুদ্রর সঙ্গে সেইভাবে এর আগে কাজ করা হয়নি। একটা ছোট্ট কাজ করেছিলাম। সেটাও সিরিয়ালই ছিল। কিন্তু সেটা খুব কম দিনের জন্য আর এরকম জুটি বেধে অভিনয় ছিল না। তো এইটা একদম প্রথমবার ওর সাথে নতুন একটা পেয়ার আপ হয়েছে অন স্ক্রীন। তো সেটা আমার খুব ভালো লাগছে। আমি যে রকম রেসপন্স পাচ্ছি তুমিও বোধহয় তাই( রুদ্রকে) কি ভালো লাগছে তো?
রুদ্র: হ্যাঁ ( হাসি )
মিমি: মানুষের ভালোলাগছে, দর্শকের ভালোলাগছে, আর চরিত্র গুলো খুব ইন্টারেস্টিং ভাবে দেখানো হচ্ছে যেখানে গল্পটা আরো বেশি স্ট্রং লাগছে। এখানে এরকম দুটো মানুষেরই দরকার ছিল যারা একে অপরের বিপরীত। যেখানে ও সবসময় উচ্ছ্বসিত থাকতো সেখান থেকে হঠাৎ করে এরকম বিয়ে। আর আমার চরিত্রটা বিধবা ছিল। তার বিয়ের প্রথম রাতেই তার বর মারা গিয়েছিল। সেখান থেকে তার আবার বিয়ে। তো খুব ভালো একটা ব্যাপার। অফস্ক্রীন বলতে গেলে খুব ভালো লাগছে সবার সাথে কাজ করতে। ও তো প্রথম থেকেই কাজ করছে ওর কাছে এটা আরও বেশি অন্যরকম। আমার কাছেও খুব ভালো কারণ সবার সাথে প্রত্যেক দিন দেখা হচ্ছে প্রতিদিন কাজ করছি । আর আমাদের সময় যেহেতু খুব একটা বেশি থাকে না তার মধ্যেই দুজনে…..
রুদ্র: আমাদের মেক আপ রুম থেকে ফ্লোর পুরোটা কিন্তু খুশি খুশি থাকে।
মিমি: পুরোটা খুব পজিটিভ একটা ভাইবস। হ্যাঁ এমনি হয়তো আমি সবার সঙ্গে খুব একটা বসে সাংঘাতিক আড্ডা মারছি এমনটা হয়নি। কেনো কি আড্ডা মারার সময় টাও আমাদের কাছে এতো কম থাকে যেটুকু সময় সিন হয় সেটুকু সময়ই আমরা কথা বলি না আড্ডা মারি কিন্তু আদারওয়াইজ সবাই মোটামুটি কাজের চাপে থাকি। ওইভাবেই কাজটা খুব ভালো বেরিয়ে যায়। হাসি মজা করতে করতে কাজটাও কখন হয়ে যায় অথচ ক্লান্তিও হয়না ওরম একটা ব্যাপার।
প্রশ্নকর্তা: দর্শকদের জন্য যদি কিছু বলো যারা তোমাদের এতো ভালোবাসা দিচ্ছে
মিমি: দর্শকদের একটাই কথা বলবো যে আপনারা যেরকম ভাবে ভালোবাসা এতো বছর দিয়েছেন সেরকমই দেবেন। পিলু তে সবাই খুব মন দিয়ে কাজ করছে। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগছে। আপনাদের সবার মনোরঞ্জন হচ্ছে । তো আপনাদের জন্যই এই কাজ আমাদের। ভালোবেসে কাজটা করতে চেষ্টা করি প্রত্যেকটা মুহূর্তে।
(মিমি এবং রুদ্র একসঙ্গে) আপনাদের আনন্দ দেয়ার জন্যই আমাদের যা কাজ করা।
মিমি: তাই আপনারা দেখবেন ভালো লাগলে আমাদেরও আরও ভালোলাগবে।
(মিমি রুদ্র একসঙ্গে) আপনাদের ফিডব্যাক অবশ্যই জানাবেন। ভালো হোক খারাপ হোক।
রুদ্র: আহির-পিলু মল্লার-রঞ্জা বা মল্লিকা-রঙ্গন আপনাদের কিরকম লাগছে বা পারিবারিক সিন কিরকম লাগছে অবশ্যই জানান। কারণ আপনাদের ফিডব্যাকটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ন। এই ফিডব্যাক গুলোর জন্যই কিন্তু আমাদের আরও কাজ করার ইচ্ছে জাগে। প্লিজ আপনারা ফিডব্যাক দেবেন। এবং আপনারা আমাদের ভালোবাসুন এবং প্লিজ পিলু দেখতে থাকুন। সোম থেকে রবি…..
মিমি: …..ঠিক সন্ধ্যে ছটায়