ফ্যাশন জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র শর্বরী দত্ত আজ আর নেই। তার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে। আচমকা রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নানা মুনির নানা মত। আসলে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুটা এখনও যেন কেউই হজম করতে পারছেনা। পারারও কথা নয়, এহেন একজন ফ্যাশন আইকন যারা ফ্যাশনের ছোঁয়ায় বলি-টলি সকলেই সেজে উঠেছে, তিনি আর নেই। সত্যিই যেন মড়ক লেগেছে এই বছরটাতে।
শর্বরী দত্ত মানেই চোখের নীচে মোটা কাজল, গলায়-কানে ভারী গয়না, আঙুল গুলি সুসজ্জিত নানা ডিজাইনের আংটি দিয়ে। এই জলজ্যান্ত চেহারাটাই যেন চোখের সামনে বাড়ে বাড়ে ফিরে আসছে। মৃত্যুর পর নানা জল্পনা ক্রমশ যেন গাঢ় হচ্ছে। সম্প্রতি তার এবং তার ছেলের বয়স নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। শর্বরী দত্তের ফেসবুক প্রোফাইল বলছে তার জন্ম ১৯৫৭ সালে এবং তার বর্তমান বয়স ৬৩ বছর। অন্যদিকে ছেলের জন্মসাল ১৯৬৪ অর্থাৎ মা ও ছেলের বয়সের ব্যবধান মাত্র ৭ বছর, কিন্তু তা কি করে সম্ভব? এই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
তাহলে শর্বরী দত্তের আসল বয়স কত? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুক প্রেফাইল বলছে ৬৩ কিন্তু পুলিশ বলছে তার বর্তমান বয়স ৮০ বছর। এবং তার ছেলে অমলিন দত্ত তা জানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে কি কারণে নিজের বয়স সকলের থেকে লুকিয়েছিলেন শর্বরী দত্ত? পরিবার সূত্রে আরও জানা গেছে, নিজের যৌবন ধরে রাখতে হরমোন থেরাপিও নিতেন শর্বরী দেবী। তবে কি তার ওভারডোজেই মৃত্যু হয়েছে বিখ্যাত ডিজাইনারের। তা এখনও নিশ্চিত নয়, সবটাই জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর। গতকাল গভীর রাতেই শৌচাগার থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। তার এই অস্বাভাবিক মৃত্য নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য এনআরএস হাসপাতালে রয়েছে। পারিবারিক সূত্রে খবর পেয়ে কড়েয়া থানাক পুলিশ পৌঁছায় ডিজাইনারের বাড়িতে। সেখানেই তাদের পারিবারিক বন্ধু তথা অর্থপেডিক সার্জেন অমল ভট্টাচার্য যান।
সূত্র থেকে জানা যায়, পুলিশের অনুমতি নিয়েই দেহ ঘরে আনা হয়েছে। শর্বরী দত্তের ছেলে জানিয়েছেন, গতকাল সারাদিন মায়ের সঙ্গে কোনও দেখা হয়নি। এবং ১৬ তারিখও তিনি বাড়ির বাইরেই ছিলেন। ১৬ তারিখ লাস্ট ডিনারে মায়ের সঙ্গে দেখা। তারপরেই এই ঘটনা। ১৭ তারিখ বাথরুমে নিথর দেহ দেখতে পেয়েই পারিবারিক বন্ধু তথা অর্থপেডিক সার্জেন অমল ভট্টাচার্যকে খবর দেন তারা। দীর্ঘদিন ধরেই অনেক রকমের ওষুধ খেতেন শর্বরী দত্ত। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন,বাথরুমে তার দেহের পাশে রক্ত পড়ে ছিল। তবে দেহ কতক্ষণ সেখানে পড়ে ছিল তা জানা যায়নি। এবং সেই দেহও তিনি ছুঁয়ে দেখেননি। শুধু তাই নয়, কানের পাশেও একটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে বলেও জানিয়েছন চিকিৎসক। তবে ডাক্তারের মন্তব্যে শর্বরীর পূত্রবধুর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হরমোনের ওষুধ খাচ্ছিলেন, যার জন্য পিরিয়ড-এর মতো তার রক্ত বেরোত। বাথরুমে পড়ে থাকার রক্ত সেটাই বলে দাবি পূত্রবধুর। ইতিমধ্যেই তার মৃত্যু জটিল রহস্য খতিয়ে দেখছে হোমিসাইড শাখা।