দাবাং ৩-এ কি অমিতাভ বচ্চন অভিনীত কালিয়ার প্রভাব রয়েছে? এখন এমন প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। কারণ, ট্রেলার মুক্তির পর যা জানা গিয়েছে তাতে দাবাং-৩ হল ছবির নায়ক চুলবুল পাণ্ডের দাবাং হয়ে ওঠার গল্প। কী ভাবে একজন সিধেসাধা প্রেমিক দাবাং হয়ে উঠলেন সেটাই পরতে-পরতে ডানা মেলেছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- দাবাং ৩-এর ট্রেলার মুক্তিতে চুলবুল পান্ডে নয়, খোশ মেজাজে ধরা দিলেন সলমন
ফলে দাবাং ৩-কে একদিক থেকে সিক্যুয়েলের সঙ্গে সঙ্গে প্রিক্যুয়েলও বলা যেতে পারে বলে দাবি করছেন চলচ্চিত্র সমালোচকরা। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত কালিয়া-র কাহিনিও অনেকটা তেমনই। এক অসহায় গরিব যুবকের কালিয়া হয়ে ওঠার কাহিনি। শয়তান মিল মালিকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে অকালে মৃত্যু-র মুখে পতিত হয়েছিল কালিয়ার দাদা। শয়তান মিল মালিকের কাছে দাদার জন্য সে প্রাণ ভিক্ষাও চেয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল সে। এমনকী, দারোয়ানদের দিয়ে গলাধাক্কা দিয়ে তাকে বের করে দিয়েছিল শয়তান মিল মালিক। দাদা-কে বাঁচানোর জন্য কালিয়া তখন সেই শয়তান মিল মালিকের সিন্দুক ভেঙে টাকা চুরি করে। কিন্তু বাড়ি ঢুকে সে দেখে দাদা-র মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ এসে কালিয়া-কে গ্রেফতার করে জেলে পুরে দেয়। জেলের মধ্যেও অত্যাচারের সম্মুখিন হয়ে গর্জে ওঠে কালিয়া। আস্তে আস্তে সে হয়ে ওঠে জেলের দাদা। পরে জেল থেকে বেরিয়ে সে অন্ধকার দুনিয়ার বেতাজ বাদশা হয়। শয়তান মিল মালিকের বিরুদ্ধে সে প্রতিশোধ নেয়।
আরও পড়ুন- ধুন্ধুমার ঘটিয়ে এসে গেলেন 'দাবাং ৩' সলমন, মুক্তি পেতেই ভাইরাল হল ট্রেলার
দাবাং-৩-এর কাহানিও অনেকটাই কালিয়ার মতো এক অসহায় মানুষের বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ট্রেলারেই প্রকাশ যে সলমন নিজের মুখেই জানাচ্ছেন চুলবুল পাণ্ডের দাবাং হয়ে ওঠার পিছনে এক কাহিনি রয়েছে। আর সেই কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে এক সুন্দরী তরুণীর কথা। এই তরুণীর ভূমিকাতেই অভিনয় করছেন সাই মঞ্জেরেকর। অভিনেতা, পরিচালক-প্রযোজক এবং নাট্য ব্যক্তিত্ব মহেশ মঞ্জেরেকরের মেয়ে হলেন সাই। তাঁকেই এবার দাবাং ৩-এ ব্রেক পাইয়ে দিয়েছেন সলমন।
আরও পড়ুন- ইনিই আমার সুপার সেক্সি মিসেস,কাকে বললেন সলমন
সাই যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল চুলবুল পাণ্ডের। সে সময় চুলবুল অত্যন্ত এক সরল ও পরিস্কার মনের মানুষ। যে প্রেমিকার সঙ্গ পেলে আবেগে ভেসে যায়, আহ্লাদিত হয়ে পড়ে। কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। তার এহেন প্রেমে নজর পড়ে এক শয়তানের। আর সেই শয়তানের চক্রান্তে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে চুলবুলের জীবন। অকালে সে হারিয়ে ফেলে তার প্রেমিকাকে। জীবনের এই ঘটনাই তার মধ্যে দাবাং মানসিকতার জন্ম দেয় এবং জন্ম হয় এক ভয়ডরহীন পুলিশ অফিসারের।
ট্রেলারে যে ভাবে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তাতে চলচ্চিত্র সমালোচকদের মনে হচ্ছে, তার প্রথম জীবনের সেই শয়তানের সঙ্গেই নতুন করে সাক্ষাৎ হয় চুলবুলের। এতে পুরনো সেই প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে চুলবুলের মনে। ঘটনা পরম্পরায় সেই শয়তানের সঙ্গেও বারবার দ্বন্দ্ব লাগতে থাকে চুলবুলের। দাবাং-৩-এর কাহিনি এভাবেই পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই পুরো কাহিনি এবং এক সাধারণ মানুষের প্রতিবাদী হয়ে ওঠার সঙ্গে কালিয়া-র অনেকটাই মিল রয়েছে বলেই দাবি চলচ্চিত্র সমালোচকদের। তবে, দাবাং ৩-কে পুরোপুরি কালিয়া-র টুকলি বলতে চান না তাঁরা। বরং তাঁদের বক্তব্য যে দাবাং ৩ প্রভাবিত হলেও হতে পারে।
ট্রেলার মুক্তি পেতেই দাবাং-৩-এর বেশকিছু সংলাপও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। সেই সব সংলাপগুলি বলার সঙ্গে সঙ্গে কালিয়া-র অনেকটাই মিল রয়েছে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কালিয়া আজও বক্স অফিসের সাফল্যের দিক থেকে এবং মশালাদার সিনেমার আদর্শ উদাহরণ। কারণ, কালিয়া ছবির মূল ইউএসপি হলো এর চরম নাটকীয়তা, সংলাপ, সাধারণ মানুষের এক অসামান্য হয়ে ওঠার গল্প, এক সহজ-সরল মানুষের বদলে যাওয়ার গল্প, অদৃষ্টবাদ ও মেলোড্রামা। এই সমস্ত গুণের সঠিক মিশ্রণ ঘটেছিল কালিয়া-তে। দাবাং ৩-ও এই একই ফর্মূলায় বক্স অফিস কাঁপাতে চলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।