কেরলের পালাককাদ জেলার ঘটনায় লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে মানবজাতির। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটাই রব। করোনা, আমফান, নিসর্গ, ডেঙ্গু, মানবজাতির ধ্বংস হয়ে যাওয়াই উচিত। গর্ভবতী হাতিকে বিস্ফোরকে ভরা আনারস খাইয়ে দিল পালাককাদের একাংশ মানুষ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছাড়া হল ভিডিওটি। দিনের পর দিন যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মারা গেল হাতিটা। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর যদিও অন্য ব্যাখা উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু অংশে। হাতিটিকে নাকি খাওয়ানি হয়নি বিস্ফোরক ভরতি আনারস। মাটিতে পরে আনারসটি সে নিজেই খেয়েছে। যদিও এই ঘটানর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শ্রদ্ধা কাপুর। পশু-অত্যাচার নিয়ে তিনি পূর্বেও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করেছেন। এই নিন্দনীয় ঘটনাটি নিয়ে পিটিশন ফাইল করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুনঃবাসু চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ মোদির, ট্যুইট করলেন অমিতাভ বচ্চন, অরিন্দম শীলও
শ্রদ্ধা প্রশ্ন তুলেছেন, "কেন, কীভাবে, মানুষের কি মন বলে কিছু নেই। এরম একটা ঘটনা ঘটল কীকরে। এর পিছনে যারা দায়ি তাদের শাস্তি পেতে হবেই।" কেরলের মুখ্যমন্ত্রী এবং পিটাকে ট্যাগ করেছেন তিনি নিজের ট্যুইটে। ইতিমধ্যেই শ্রদ্ধার মত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই নেটিজেনরা তুলেছে নানা প্রশ্ন, নানা নিন্দা। যেমন, ঠিক কী চিন্তা করছিল সেই জেলার মানুষগুলি এই কাজটি করার আগে। নিত্যদিনের মত সকালে জলখাবার খেয়ে বাড়িতেই বসে থাকা। বাড়িতে কোনও কাজ কিংবা স্মার্টফোনে সময় কাটানো। এই তো বেশ ছিল। খামোখা বাড়িতে বেরিয়ে এমন নৃশংস কান্ড ঘটাবার কী প্রয়োজন ছিল তার কূল কিনারা পাচ্ছে না একাংশ মানুষ। হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে মনে হল, আজ একটি গর্ভবতী হাতিকে মারব বিস্ফোরক ভরা আনারস খাইয়ে। সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এমন ভাবনা চিন্তা রাখতে পারে ভাবলেই অবাক লাগে। বা হয়তো এই ঘটনাটগুলিকে মানসিক অসুস্থতার নাম দিয়ে আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি। মানবজাতি সত্যিই এতটাই নৃশংস। কী ধরণের বিনোদন পেতে এই কাজটি করল কেরলবাসী, তার কোনও ব্যাখা মেলেনি।
আরও পড়ুনঃ২৮০০০ মানুষের প্রাণ বাঁচালেন সোনু, নিসর্গকে রুখতে সুরক্ষিত বাসস্থান দিলেন তাদের
শ্রদ্ধার পাশাপাশি অনুষ্কা শর্মা, রণদীপ হুডা, টাইগার শ্রফ, দিশা পাটানি সহ অনেকেই সরব হয়েছেন নেটদুনিয়ায়। আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে শিল্পের কারুকার্য। একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসুক বা গর্ভবতী হাতিকে হত্যা, কিছু মানষ কল তুলি হাতে রেডি থাকে। আজও নিউজ ফিডে হাতিটি এবং তার বাচ্চাকে নিয়ে চলছে নানা ছবি আঁকা, গল্প লেখা। বলছি, কাল মাথায় থাকবে তো হাতিটার কথা। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে শেষ সময় অবধি পেটের ভিতর থাকা নিজের সন্তানের কথাই ভেবে গিয়েছিল মা, এই কথাটা কোয়ারেন্টাইন সেলফি তোলার সময় মনে থাকবে তো। এই সময় রুদ্রনীলের ভিঞ্চি দা'র মিমটার কথা মনে পড়ে যায়। মানবতার মুখোপ পড়ে কখন হিপোক্রিসি বেরিয়ে আসবে, ধরতে পারবেন না। সত্যি তো তাই, আমফানের সময় যারা বাড়ি ঘরদ্বোর হারালো তাদের জন্য আর্তনাদ করে গলা ফাটাল নেটিজেন। তারাই আবার জামাইষষ্ঠীতে থালা ভরে খাবারের ছবি পোস্ট করছে।