করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণের মসিহা হয়ে উঠেছিলেন সোনু। নিজের সাধ্যমতো সবার দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকী, কণিকা লায়েকের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
জাতীয়স্তরের শ্যুটার (National Level Shooter) কণিকা লায়েকের (Konica Layak) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বালির একটি লেডিস হোস্টেল থেকে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের জেরেই তিনি আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশেই। কণিকার মৃত্যুতে মন ভালো নেই বলি তারকা সোনু সুদেরও (Sonu Sood)।
করোনা পরিস্থিতির (Corona Situation) মধ্যে সাধারণের মসিহা হয়ে উঠেছিলেন সোনু। নিজের সাধ্যমতো সবার দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকী, কণিকা লায়েকের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
কীভাবে সাহায্য করেছিলেন?
২০২০ সালে ঝাড়খণ্ডের রাজ্য শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে একটি সোনা এবং রুপোর পদক জিতেছিলেন কণিকা। কিন্তু, সেই সময় তাঁর নিজের কাছে কোনও রাইফেল ছিল না। এদিকে রাইফেল কেনার মতো টাকাও ছিল না। এরপর সোনু সুদকে টুইটারে ট্যাগ করে নিজের আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছিলেন কণিকা। এমনকী, ঝাড়খণ্ড সরকারের থেকে কোনও সাহায্যই পাননি বলে অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, উন্নতির জন্য তাঁর একটি ভালো রাইফেলের প্রয়োজন। তারপরই কণিকার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সোনু।
গরীবের মসিহা বলে পরিচিত এই বলিউড অভিনেতা ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার একটি রাইফেল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কণিকার বাড়িতে। চলতি বছরের মার্চের ঘটনা সেটি। টুইটারে সোনু লিখেছিলেন, "আমি তোমাকে রাইফেল দেব। তুমি দেশকে মেডেল দিও। তোমার রাইফেল তোমার কাছে ঠিক পৌঁছে যাবে।" সেই মতো সোনুর দেওয়া রাইফেল পৌঁছে গিয়েছিল কণিকার কাছে। আর রাইফেল হাতে পেয়ে খুবই খুশি হয়েছিলেন কণিকা।
তারপরই চলতি বছরের ১৯ জুলাই বাংলার প্রখ্যাত শ্যুটার জয়দীপ কর্মকারের (Joydeep Karmakar) অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য কলকাতায় আসেন কণিকা। তখন থেকেই বালির (Bally) বীরেশ্বর চ্যাটার্জি স্ট্রিটের মুক্তি লেডিস হোস্টেলে (Ladies Hostel) থাকা শুরু করেছিলেন। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরেই অনুশীলনে ভালো ফল করতে পারছিলেন না। ক্রমে হতাশা গ্রাস করেছিল তাঁকে। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পরই তিনি আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, বড় কোনও প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন কণিকা। কিন্তু, তার জন্য সঠিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে না পারায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অবশ্য তা নিয়ে কারও কাছে কোনও কথা বলেননি। তারপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। বালির ওই হোস্টেলের ঘর থেকেই বুধবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মিলেছে সুইসাইড নোটও ৷
আরও পড়ুন- মানসিক অবসাদের জেরে আত্মহত্যা, বালিতে উদ্ধার শ্যুটারের ঝুলন্ত দেহ
কণিকার মৃত্যুতে মন ভেঙে গিয়েছে সোনুর। টুইট করে নিজের শোকপ্রকাশ করেছেন অভিনেতা। একটি সংবাদপত্রের তাঁর মৃত্যু সংক্রান্ত প্রতিবেদন শেয়ার করে টুইটারে সোনু লেখেন, "আজ শুধু আমার নয়, আজ শুধু ধানবাদের নয়, আজ গোটা দেশের মন ভেঙে গিয়েছে ৷" আরও একটি টুইটে তিনি লেখেন, "এই দুঃখের খবরটা পেয়ে মন পুরো ভেঙে গেল, আমার মনে আছে যখন কণিকাকে রাইফেল পাঠিয়েছিলাম তখন ও অলিম্পিকে মেডেল জেতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আজ সে সবই শেষ হয়ে গেল। ভগবান তার পরিবারকে শক্তি দিক।"
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারফর্ম্যান্সের উন্নতি না হওয়ার কারণেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কণিকা। যদিও তাঁর মায়ের বক্তব্য, তিনদিন আগেই কলকাতায় মেয়ের সঙ্গে দেখা করে ধানবাদে ফিরেছিলেন তিনি। তখন মেয়ের কোনও অবসাদ ছিল না। এমনকী, কোচের সঙ্গে কণিকার সম্পর্ক ভালো ছিল না বলে জানা গিয়েছে। তার জেরে কোচকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সব দিক। ফলে কণিকার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।